ছাত্রদের হত্যার দায় এবং জনরোষে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে গেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরেই গা ঢাকা দেয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারাও। ভেঙে যায় দেশের আইনশৃঙ্খলা। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো এগিয়ে আসে। তাদের পাশে দাড়ায় রাজনৈতিক দলগুলোও। ছাত্রজনতা রাত জেগে পাহারা দেয় পাড়া-মহল্লা এবং মন্দিরগুলোতে।
পরিস্থিতি ঘোলা হওয়ার আগেই দেশের হাল ধরতে এগিয়ে আসে সেনাবাহিনী। গঠন করা হয় অন্তর্বর্তী সরকার। তারপরও মাঠে নামেনি পুলিশ। একে একে ১০ দিন পুলিশ শূন্য থাকে গোটা দেশ। যদিও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের আল্টিমেটামের পর কয়েকজন থানা স্টেশনে আসে কিন্তু তারা দায়িত্বপালনে এগিয়ে আসেনি। সেই আল্টিমেটাম শেষ হয়েছে গতকাল ১৫ আগস্ট। এখনো কিছু কর্মকর্তা যোগ দেয়নি কাজে। বিশেষ করে ক্ষমতাচ্যুত সরকারঘেঁষা হিসেবে পরিচিত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বেশিরভাগ কর্মকর্তা কাজে যোগ দেননি। তারা ‘চাকরি করতে চাইছেন না’ বলে ধরে নিয়ে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
পুলিশ সদস্যদের ১৫ আগস্টের মধ্যে কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে অনুপস্থিতরা আর ‘চাকরি করতে চাইছেন না’ বলে ধরে নেওয়া হবে। সে হিসেবে পরবর্তী ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। ১৫ আগস্টের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে চাকরি থাকবে না পুলিশের।
ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, সমালোচিত ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) হারুন অর রশীদ, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারসহ অন্তত ১৫ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কাজে যোগ দেননি।
এরমধ্যে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার ঊর্ধ্বতন পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন। তাদের কক্ষে তালা ঝোলানো দেখা যায়। এদের সকলের ফোনও বন্ধ।
ডিএমপি সদর দপ্তরের ক্রাইম বিভাগ ও প্রশাসন বিভাগসহ দুই-একটি ইউনিটের সদস্যরা পুরোদমে অফিস করছেন। তবে থানাগুলোতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিয়েছেন।
থানাগুলো চালু হলেও বেশির ভাগ থানাতেই মামলা দায়ের হয়নি। গত চার দিনে ২৫০টির মতো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। আগে দিনে প্রায় এক হাজার জিডি হতো।