বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে নিহতের ঘটনায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের নামে ছয়টি হত্যা মামলা হয়েছে।
আন্দোলনে সিলেটে সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ ১২ জন নিহত হন।
এরমধ্যে গত ৪ আগস্ট গোলাপগঞ্জে ছয় জন এবং আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন ৫ আগস্ট বিয়ানীবাজারে আরও তিন জন নিহত হন।
সিলেট-৬ আসনের অন্তর্গত এ দুই উপজেলা গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে নয়টি হত্যাকাণ্ড ঘটে। এর মধ্যে সাতটির মামলা হয়েছে। এই সাতটি মামলার প্রধান আসামি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অফিল উদ্দিন আহম্মদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আদালতে চারটি এবং বিয়ানীবাজারে তিনটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। তবে আসামিদের কাউকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি।
সোমবার (২৬ আগস্ট) বিয়ানীবাজার থানায় পৃথক দুটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে নিহত ময়নুল ইসলামের (৪২) স্ত্রী শিরিন বেগমের দায়েরকৃত মামলায় (নং-০৭(০৮)২০২৪) নুরুল ইসলাম নাহিদ (৮৪) ছাড়াও ২৮ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও আট হাজার ৯০ জনকে আসামি করা হয়।
এজাহারে উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্বাস উদ্দিন (৫০), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব (৫০) ও বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জুয়েল আহমদ (২৭)।
এছাড়া মামলায় ২৮ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আট হাজার ৯০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। একই দিন নিহত রায়হান উদ্দিনের (১৮) বড় ভাই বোরহান উদ্দিন বাদী হয়ে দায়েরকৃত অপর হত্যা মামলায় (নং-০৮(০৮)২০২৪) সাবেক সংসদ নুরুল ইসলাম নাহিদ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানসহ ৩০ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা সাত হাজার ৮০ জনকে আসামি করা হয়।
এছাড়া আন্দোলনে নিহত তারেক আহমদের মা ইয়ারুন নেছা বাদী হয়ে গত ২০ আগস্ট পৃথক হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা প্রধান আসামি বিয়ানীবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লবসহ ৭৫ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়।
এদিকে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সিলেট-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদের বিরুদ্ধে গোলাপগঞ্জ থানায় তিনটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। প্রতিটি হত্যা মামলায় এ আসনের সাবেক এমপি ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নাহিদকে প্রধান আসামি করা হয়।
গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ আব্দুন নাসের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট গোলাপগঞ্জে দর্জি দোকানি জয় আহমদ (১৮) নিহত হন। এই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মনোয়ার মিয়া বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী-২ আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় নুরুল ইসলাম নাহিদকে প্রধান করে ৬৬ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০ হাজার ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।