সংঘবদ্ধ অপরাধী গোষ্ঠীর পক্ষে তৎপরতা চালানোর অভিযোগে ফ্রান্সে আটক হয়েছেন টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পাভেল দুরভ। জামিন পেলেও ফ্রান্স ছাড়ার অনুমতি পাচ্ছেন না তিনি।
বেশ কয়েকটি দেশের পাশাপাশি ফ্রান্সের পাসপোর্টও রয়েছে পাভেলের।
এমন পরিস্থিতিতে চাপে পড়েছে ফরাসি সরকার। তবে নিয়ম মেনেই পাভেলকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
সার্বিয়া সফররত মাখোঁ বলেন, ‘টেলিগ্রামের সিইও পাভেল দুরভকে ফরাসি নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টিতে কোনো ভুল ছিল না। বস্তুত, পাভেল জন্মগতভাবে রাশিয়ার নাগরিক। কিন্তু তার কাজের জন্য ফ্রান্স তাকে ফরাসি নাগরিকত্ব দিয়েছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘যারা ফরাসি ভাষা রপ্ত করে নিতে পারেন এবং কাজের জগতে বিশেষ অবদান রাখতে পারেন, তাদের ফরাসি নাগরিকত্ব দেয়া হয়। পাভেলের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। ফলে এখন যারা তাকে নাগরিকত্ব দেয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, আমি তাদের সঙ্গে একমত নই।’
২০১৩ সালে টেলিগ্রাম প্রতিষ্ঠা করেন পাভেল দুরভ। রাশিয়া, ইউক্রেন ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোয় এ অ্যাপ বেশ জনপ্রিয়। রুশ সরকারের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে ২০১৪ সালে রাশিয়া ছেড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত চলে যান। সেখান থেকেই টেলিগ্রাম পরিচালিত হয়। মাঝখানে ২০১৮ সালে টেলিগ্রাম নিষিদ্ধ করলেও ২০২১ সালে সেটা প্রত্যাহার করে রুশ সরকার।
পাভেল বিভিন্ন সময় বলে এসেছেন, টেলিগ্রাম নিরপেক্ষ সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্ম। তিনি এও দাবি করেছেন, রাশিয়ার হস্তক্ষেপ থেকে বাঁচতে তিনি দেশ ছেড়ে চলে যান। তবে বিভিন্ন দেশের দাবি, টেলিগ্রাম জঙ্গি, সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা নিরাপদে ব্যবহার করে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। কারণ, এ অ্যাপ ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষায় সর্বোচ্চ জোর দেয়।
এদিকে ফ্রান্সে পাভেলের আটকের ঘটনায় মুখ খুলেছে রাশিয়া। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, পাভেল ষড়যন্ত্রের শিকার।
ফ্রান্সকে হুশিয়ারি দিয়ে পেসকভ জানিয়েছেন, ‘রাজনৈতিক কারণে’ পাভেলের এই গ্রেপ্তার রাশিয়া কোনোভাবেই বরদাশত করবে না।
অন্য আরেক সূত্র বলছে, পাভেল সংযুক্ত আরব আমিরাতেরও নাগরিক। আমিরাত সরকার জানিয়েছে, পাভেলের আটকের পুরো ঘটনায় গোটা বিষয়টির দিকে নজর রাখা হচ্ছে এবং ফ্রান্সের সরকারের সঙ্গে ইতোমধ্যেই যোগাযোগ করা হয়েছে।