রাজধানীর গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্যদের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার রাতে মতবিনিময় করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ সময় তিনি বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। শেখ হাসিনার অধীনে অবশ্যই নয়। তার অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি তিনি নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহনের আহবান জানান এবং মাঠ পর্যায়ে সফরের নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় থাকতে জোর করে একতরফা নির্বাচন করতে চায়। জনগণকে নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে খুশিমনে ভোট দিতে হবে। নির্বাচনে বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। নির্বাচনে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ মানবো না।
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর ৫৩ জন সদস্য অংশ নেন।
উপদেষ্টারা বেগম জিয়াকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলো সফরের তাগিদ দেন। দলের কর্মকাণ্ড গতিশীল করতে এবং নেতাদের সক্রিয় রাখতে একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল গঠন করার পরামর্শ দেন।
দলের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদিন ফারুক ও তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ম্যাডাম বলেছেন শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। তারা জানান, দ্রুত জেলা কমিটিগুলোর পুনর্গঠন শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়া। যেসব জেলায় বিরোধ আছে তা চিহ্নিত করে শিগগিরই মীমাংসা করার জন্য বলেছেন। যারা দলে বিভেদ-বিশৃংখলা করবে তাদের বহিস্কার করা হবে বলে কড়া হুশিয়ারী দেন বেগম জিয়া।
তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ম্যাডাম বলেছেন নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার, সেনা মোতায়েন, ইসির নিরপেক্ষতা, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ না হলে নির্বাচনের যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
উপদেষ্টাদের তাদের নিজ নিজ জেলায় সভা ও সমাবেশ করার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে সংগঠন গোছাতে দলকে পরামর্শ দিতে বলেছেন।
বৈঠকে উপদেষ্টা কাউন্সিলের ৫৩ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন উকিল আব্দুস সাত্তার, লুৎফর রহমান খান আজাদ, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আনহ আখতার হোসেন, মাজেদুল ইসলাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, জয়নাল আবেদিন ভিপি জয়নাল, মনিরুল হক চৌধুরী, মেজর(অ.) কামরুল ইসলাম, সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি, এম এ কাইয়ুম, জহুরুল ইসলাম, ইসমাইল জবিউল্লাহ, আবদুর রশিদ, হায়দার আলী, জিয়াউর রহমান খান, তাজমেরী এস ইসলাম, শাহিদা রফিক, গোলাম আকবর খন্দকার, কাজী আসাদ, কবির মুরাদ, অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া, একরামুজ্জামান, ফজলুর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, নজমুল হক নান্নু, তাহমিনা রুশদীর লুনা, এনামুল হক চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম, সুকোমল বড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকার, আবদুল হক, তৈমুর আলম খন্দকার, কামরুল মুনির, বোরহান উদ্দিন, আবদুল বায়েছ ভুঁইয়া, আবদুস সালাম, শাহাজাদা মিয়া, এস এম ফজলুল হক, এম এ লতিফ, আবদুল কুদ্দুস, আবদুল মান্নান তালুকদার, ফরহাদ হালিম ডোনার, খন্দকার মুক্তাদির আহমেদ, মামুন আহমেদ, সৈয়দ শামসুল আলম, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, মাহবুবুর রহমান প্রমূখ।
৭৬ সদস্যের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্যদের মধ্যে তিনজন হারুনার রশীদ মুন্নু, ফজলুর রহমান পটল ও আখতার হামিদ সিদ্দিকী মারা গেছেন।