বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদদের স্মরণে ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা থেকে সৌদি আরবে পুলিশের হাতে আটক বাঁশখালীর চারজনসহ ৮ প্রবাসীর মুক্তি মেলেনি ২৫ দিনেও।
গত ১৬ আগস্ট সৌদি আরবের মাহাইল এলাকা থেকে তাদের আটক করে সৌদি পুলিশ।
এ ঘটনায় প্রবাসীদের পরিবার মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনসহ নানা প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করলেও এখনো কোনো সুফল মিলেনি।
বর্তমানে সৌদি কারাগারে আটক ব্যক্তিরা হলেন, বাঁশখালীর বড়ঘোনা গ্রামের মাওলানা হাফেজ রহমত উল্লাহ, মিনজিরিতলা গ্রামের মাওলানা হাফেজ খলিলুর রহমান, মনকিচর গ্রামের হাফেজ ওমর ফারুক ও চাম্বল গ্রামের জয়নুল আবেদীন, সাতকানিয়ার সামিউল ইসলাম, মোহাম্মদ ইউসুফ, সেলিম উল ইসলাম ও বান্দরবানের মো. আশরাফুল ইসলাম।
বাঁশখালীর বাসিন্দারা জানান, মাওলানা হাফেজ রহমত উল্লাহসহ আরও কয়েকজন পরিবার-পরিজন নিয়েই সৌদি আরবে বসবাস করছেন। হাফেজ রহমত উল্লাহ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সৌদি আরবের স্থানীয় শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট সরকার পতনের আনন্দে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদদের স্মরণে ও আহতদের সুস্থতা কামনায় ১৬ আগস্ট সৌদি আরবের মাহাইলে এক দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করেন প্রবাসীরা। ওই সভায় আবহাসহ সৌদি আরবের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রবাসীরা যোগ দেন।
অনুষ্ঠানের শেষের দিকে ‘আইন অমান্যের’ অভিযোগ তুলে ১৮ বাংলাদেশি প্রবাসীকে ধরে নিয়ে যায় সৌদি পুলিশ। সেখান থেকে ১০ জনকে পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও বাঁশখালীর চারজনসহ ৮ জনকে কারাগারে পাঠায় সৌদি পুলিশ। কারাগারে আটক অপর তিনজনের বাড়ি সাতকানিয়া এবং একজনের বাড়ি বান্দরবান।
আটক প্রবাসীদের স্বজনরা জানিয়েছেন, দুবাইতে যারা আটক হয়েছে তাদের ব্যাপারে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সৌদিতে আটক প্রবাসীদের ব্যাপারে সরকার ২৫ দিনেও কোন উদ্যোগ নেয়নি।
তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের স্বজনরা সৌদি আরবের কারাগারে। আমরা দেশে বেঁচে থেকেও মরে গেছি। আমাদের এখন দেখার কেউ নেই। প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে যন্ত্রণায়।
আটক মাওলানা হাফেজ রহমত উল্লাহর ভাগ্নে হাফেজ এহছানুল হক বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন জায়গায় আবেদন-নিবেদন করেও সরকারিভাবে এখনো কোন সুখবর পাচ্ছি না। আমার মামা ইসলামী আন্দোলনের নেতা হলেও দলীয়ভাবেও কোন সহযোগিতার কিংবা উদ্যোগ নিচ্ছেনা তারা।
প্রবাসী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দোয়া মাহফিলে লোক বেশি হওয়ায় সৌদি পুলিশ তাদের আটক করেছে। সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া হলে তারা সহজে মুক্তি পেত।’
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বলেন, বাঁশখালীর চারজনসহ ৮ প্রবাসীর মুক্তির বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।