গত কয়েকদিন ধরে তীব্র গরমে খরতাপে পুড়ছে সিলেট। বৃহস্পতিবার সিলেটের তাপমাত্রা ছিলো ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরই মধ্যে দুঃসংবাদ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
ভারতের উজানে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টি, সিলেটেও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এর প্রভাবে সিলেটে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। শুধু সিলেট নয়, দেশের পূর্বাঞ্চলের ফেনী, চট্টগ্রামসহ ৮ জেলায় স্বল্পমেয়াদী বন্যায় আক্রান্ত হতে পারে।
খনার বচনে বলা হয়েছে ‘আশ্বিনে এলো বান মানুষ গরু সাবধান’। এবার এই প্রবাদ যেন সত্যিই হতে চলেছে। ভাদ্র শেষে আশ্বিন শুরুর যে আর মাত্র একদিন বাকি! আবহাওয়া অধিদফতর এবং বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস বলছে, এসব এলাকার উজানে ভারতীয় অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। অনেকটা গত আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হওয়া বৃষ্টির মতো। বাংলাদেশের ভেতরে দক্ষিণ এবং পূর্বাঞ্চলজুড়ে আগামিকালের মধ্যে একই ধরনের ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এতে এসব এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।
দেশের বন্যা ও আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়ার দায়িত্বে থাকা ওই দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হয়েছে, শনিবার থেকে দেশের পূর্বাঞ্চলের জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও বান্দরবানের নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক পানির ঢল আসতে পারে। ফলে ওই এলাকাগুলোর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। দেখা দিতে পারে স্বল্পমেয়াদি বন্যা।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগে এবং এর উজানে ভারতীয় অংশেও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন দিন ওই বৃষ্টি চলতে পারে। এর ফলে সিলেটের প্রধান নদী সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, ধলা ও সারিগোয়াইন নদীর পানি দ্রুত বাড়বে। এতে ওই নদী তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল দুয়েকদিনের মধ্যে প্লাবিত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শনিবার সিলেটসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। বিশেষ করে দেশের উপকূলীয় এলাকা ও সিলেট এবং ময়মনসিংহ বিভাগে বৃষ্টি বেশি হতে পারে। চট্টগ্রাম ও সিলেটের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। এতে এসব এলাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা আছে।
বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানায়, আবহাওয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্যারামিটার ও আবহাওয়ার মডেলগুলো বিশ্লেষণ করে আগামী এক সপ্তাহে দেশের আবহাওয়ার বিশেষ পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। এসব পরিবর্তনে মধ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ, জলাবদ্ধতা, পাহাড় ধস ও বন্যার মতো দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে।
উল্লেখ্য যে এর আগে মে-জুলাই মাসে সিলেটে তিন দফা বন্যা হয়। এছাড়া আগস্টের শেষে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ ১১ জেলা ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে। এর ক্ষত না শুকাতেই নতুন বন্যার আভাস এলো।