দীর্ঘ ১৫ মাসের ইসরাইলি আগ্রাসনের পর অবশেষে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। স্বজন হারানোর ব্যথিত হৃদয় নিয়েই যুদ্ধবিরতির আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছে গাজাবাসী। যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গে গাজার এক নাগরিক সাংবাদিক বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে আমার পূণর্জন্ম হয়েছে।
গাজার তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মাহমুদ রোস্তম বিবিসির নিউজডে অনুষ্ঠানে বলেন, যুদ্ধের সময় যতটা প্রয়োজন ততটা ঘুমাতে পারিনি। কেননা সে সময় সর্বত্র সব সময় বোমা হামলার ভয় নিয়ে ছিলাম। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো গতকাল গভীর ঘুম ঘুমিয়েছি।
রোস্তম আরও বলেন, ৪৭০ দিন পর গতকাল আমি নিরাপদে থাকার অনুভূতিতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম এবং তাড়াতাড়ি উঠেছি।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের পর প্রথমবার ঘুম থেকে উঠে প্রতিবেশি বাচ্চাদের ফুটবল খেলতে দেখেছি। যুদ্ধ শুরুর আগের মতো স্থানীয় মিষ্টি বিক্রেতাদের দেখেছি। মনে হচ্ছে আমার পূণর্জন্ম হয়েছে।
এর আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান ফিলিপ লাজ্জারিনি বলেছেন, ‘৪৭০ দিনেরও বেশি সময় ধরে গাজায় যুদ্ধ চলার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটির মানুষ এখন বোমার শব্দের পরিবর্তে শিশুদের খেলার শব্দ শুনতে পাচ্ছে। ’
যুদ্ধবিরতির প্রথমদিন কেমন ছিল সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনটি ভালো ছিল। রোববার মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ সরবরাহের প্রবা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বলেছেন, যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখতে হবে এবং চুক্তির সব নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। এটি সবার দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সঠিক পদক্ষেপ।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৫ মাসের আগ্রাসনের পর রোববার (১৯ জানুয়ারি) বহুল কাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায়। যুদ্ধবিরতির আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছে কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধবিরতির প্রথমদিনে তিন নারী ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। এর বিনিময়ে ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলের হামলায় ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন আর আহত হয়েছেন ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ।