• বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

তারেকের অনলাইন সংলাপে করণীয় নেই ইসির: সচিব

আপডেটঃ : সোমবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৮

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যে সাক্ষাত্কার নিচ্ছেন, এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কিছুই করণীয় নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। তবে, রাজধানীয় পল্টনে মনোনয়ন ফরম বিক্রির সময় বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের বিষয়টি ফৌজদারি অপরাধ বলে মন্তব্য করেন তিনি। পুলিশের তদন্তের পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে জানানো হয়। তবে অহেতুক নিরাপদ কাউকে হয়রানী করা যাবে না। এছাড়া প্রার্থীদের আগাম প্রচারের সামগ্রী অপসারণে স্থানীয় সরকার বিভাগকে পত্র দিয়েছে ইসি।

আজ সোমবার বিকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভা শেষে তিনি এ সব কথা বলেন।

ইসি সচিব বলেন, তারেক রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগ যে অভিযোগ করেছে, আজ ইসির বৈঠকে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তারেক রহমান যেহেতু অনলাইনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাত্কার নিচ্ছেন এবং তিনি দেশে নেই, তাই আচরণ বিধিমালা তাঁর জন্য প্রযোজ্য হবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না। এই মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে ইসির কিছু করণীয় নেই। নির্বাচন কমিশনের কোনো করণীয় নেই কিন্তু যেহেতু উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনা আছে, সে নির্দেশনা প্রতিপালন করা সবার জন্য বাধ্যতামূলক।

গত রবিবার থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাত্কার নিচ্ছেন তারেক রহমান। দন্ডিত ব্যক্তির এ ধরনের কার্যক্রমকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন দাবি করে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল ওইদিনই বিকেলে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে গতকাল সোমবার বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। পরে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, তারেক রহমানের বিষয়ে ইসির কোন করণীয় নেই।

ইসি সচিব বলেন, আওয়ামী লীগের অভিযোগের বিষয়ে সোমবার আলোচনা করা হয়েছে। তারেক রহমান বিদেশ থেকে অনলাইনে কথা বলেছেন। তার এটি আচরণবিধির মধ্যে পড়ে না। নয়াপল্টনের সংঘর্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ

১৪ নভেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে মনোনয়ন ফরম বিক্রির সময় পুলিশে সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে ঘটনা ফৌজদারী অপরাধ। ঘটনাটির তদন্ত চলছে, এতে ইসির কোনো আপত্তি নাই। তাই তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসি সচিব বলেন, ওই দিনের ঘটনায় আমরা মহা পুলিশ পরিদর্শককে (আইজিপি) পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে বলেছিলাম। তারা আমাদের অডিও, ভিডিওসহ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেয়। সে সব নিয়ে নির্বাচন কমিশন বৈঠক বসে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত দিয়েছে-নয়াপল্টনে ফৌজদারি অপরাধ সংঘঠিত হয়েছে। তাই পুলিশকে অধিকতর সুষ্ঠু তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়ার জন্য আমায় বলেছেন।

তিনি বলেন, তদন্তের বিষয়ে কেউ যেন বাধা না দেয়। একইসঙ্গে যারা ঘটনায় জড়িত নয়, তাদের যেন কোনোভাবেই হয়রানি না করা হয়, সে নির্দেশনাও দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। এ ধরণের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে, সেজন্য প্রতিটি দল ও ভোটারদের সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

বিএনপির নেতাকর্মীদের মামলার তালিকার বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মামলার যে তালিকা দেয়া হয়েছে, তা পার্যলোচনা করে দেখা গেছে, দীর্ঘ তালিকার অনেক মামলাই তফসিল ঘোষণার পূর্বে হয়েছে। এগুলো নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। তবে যেগুলো তফসিল ঘোষণার পর হয়েছে, সেগুলো নিয়ে নির্বাচন কমিশন আবার বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়া নিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বিএনপির চিঠির বিষয়ে সচিব বলেন, তারা ব্যাখ্যা চেয়েছে। আমরা পরিস্কারভাবে তার ব্যাখ্যা জানিয়ে দেবো।

প্রচার সামগ্রী না সরালে ব্যবস্থা আগাম প্রচার কাজের অংশ হিসেবে পোস্টার ব্যানারসহ অন্যান্য প্রচার সামগ্রী সরিয়ে ফেলার সময় শেষ হয়েছে গত রবিবার মধ্যরাতে। এখন কারো প্রচার সামগ্রী পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সোমবার এ বিষয়ে সচিব বলেন, সারা বাংলাদেশে ৯০ ভাগ প্রচারসামগ্রী অপসারণ করা হয়েছে। যেহেতু শেষ দিন গতকাল (রবিবার) ছিল, আজ (সোমবার) আমরা আবারও সকলকে পত্র দিয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা না নামিয়ে না থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের অধিনস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগীতায় ব্যবস্থা নেবে। তিনি আরও বলেন, প্রতি উপজেলায় একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছি। আর সিটি করপোরেশনের প্রতি ৩ থেকে ৪টি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ৯০ ভাগ প্রচারসামগ্রী অপসারণের বিষয়টি সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলাপ্রশাসকরা নিশ্চিত করেছেন বলে জানান সচিব। তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধি অনুযায়ী, ম্যাজিস্ট্রেটরা শাস্তি দেবে। এক্ষেত্রে তারা স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নেবে।

পোস্টারে খালেদা জিয়ার ছবিতে বাধা নেই বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাজা হয়েছে। তাদের ছবি দলীয় প্রধান হিসেবে প্রার্থীরা পোস্টারে ব্যবহার করতে পারবেন কি না জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ব্যবহার করতে চাইলে পারবেন। এটা রাজনৈতিক দলের দলীয় সিদ্ধান্ত। আইনে কোনো সমস্যা নেই।

উল্লেখ্য, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৮ নভেম্বর। বাছাই ২ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৯ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১০ ডিসেম্বর, এদিন থেকেই প্রার্থীরা প্রচার কাজ চালাতে পারবেন। তবে ভোটগ্রহণের ৩২ ঘণ্টা পূর্বে অর্থাত্ ২৮ ডিসেম্বর রাত ১২টার মধ্যে ওই প্রচার কাজ বন্ধ করতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ