রাজধানীর অদূরে সাভারের কাউন্দিয়া এলাকায় মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান চিশতী নামে এক বাউল শিল্পীর জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘ঘনিষ্ঠ’ ডা. সৈয়দ গোলাম হাছান চিশতী আল নিজামী নামে এক ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে জমিটি দখল করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী মোখলেছুর রহমানের। জমি উদ্ধার করতে চাওয়ায় পরিবার ও তার জীবনের ওপর হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টারস্ অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মোখলেছুর রহমান চিশতী।
সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে একজন বাউল শিল্পী ও বাংলাদেশ বেতারের নিয়মিত শিল্পী হিসেবে পরিচয় দেন মোখলেছুর রহমান চিশতী। তার গ্রামের বাড়ি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায়। তিনি জানান, শিল্পী হিসেবে আয়কৃত টাকা দিয়ে সাভারের কাউন্দিয়ায় ডা. সৈয়দ গোলাম হাছান চিশতী নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে শেয়ারে ১৫ শতক জমি কেনেন। সম্প্রতি তিনি গিয়ে দেখতে পান জমিটিতে গোলাম হাছান চিশতীর পাশাপাশি অপরিচিত দুই ব্যক্তির নামে সাইনবোর্ড টানানো। পরে থানা-পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি আদালতে মামলা করেছেন, যা এখনো চলমান।
মোখলেছুর রহমান চিশতী বলেন, আমি এক সময় সিএনজি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতাম। ২০০৮ সালে এটিএন বাংলার ‘তিন চাকার তারকা’ প্রতিযোগিতামূলক একটি রিয়্যালিটি শোতে অংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করি। এরপর শিল্পী হিসেবে খ্যাতি পাওয়ার পর দেশে-বিদেশে অনেক জায়গায় গান গাই। শিল্পী হিসেবে আয়কৃত টাকা দিয়ে সাভারের কাউন্দিয়ায় জমি কিনি। সেই জমি কেনার আগে আশুলিয়া থানাধীন গোহাইলবাড়ি গ্রামের জনৈক ডা. সৈয়দ গোলাম হাছান চিশতী আল নিজামী নামে এক ব্যক্তির সাথে পরিচয় হয়। আমার স্বপ্ন ছিল একটি সুফি সাধনার আদর্শে মাদরাসা ও মসজিদ করব। সেজন্য সাভারের কাউন্দিয়া এলাকায় ডা. সৈয়দ গোলাম হাছানের মাধ্যমে শেয়ারে প্রায় ১৫ শতাংশ জমি কিনি।
তিনি জানান, তারা দুজনেই সেই জমির টাকা পরিশোধ করেন। এরপর তিনি সেই জমিতে স্থাপনা তোলার জন্য মাটি দিয়ে ভরাট করেন। পরে জমির সীমানা প্রাচীর বাঁশে তৈরি বেড়া দিয়ে নির্মাণ করে তিনি ও সেই ব্যক্তি ভোগ দখল করে আসছিলেন। কিন্তু গত ২৩ মার্চ তিনি দেখতে পান তার জমিতে সেই ডা. সৈয়দ গোলাম হাছান চিশতী ও অজ্ঞাত দুই ব্যক্তির নামে সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। এরপর তিনি বিষয়টির ব্যাপারে সাভার থানায় গেলেও তারা কোনো ডিজি নেয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি আদালতে একটি মামলা করেন। সেই মামলা এখনো চলমান।
জমি উদ্ধারে প্রশাসনের সহায়তা চেয়ে ভুক্তভোগী বলেন, আমি আমার জমিটি উদ্ধার চাই। ডা. সৈয়দ গোলাম হাছান চিশতী সাবেক সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং ঢাকা-১৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিলের অনুসারী। পাশাপাশি আওয়ামী যুবলীগের একজন সক্রিয় কর্মীও বটে। সেই সূত্র ধরেই তিনি রাজনৈতিক মদদপুষ্ট হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদরাসা এবং মসজিদ নির্মাণের জন্য আমার ক্রয়কৃত জমি আত্মসাৎ করার সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। আমাকে এবং আমার পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মামলা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দিয়ে হয়রানি করছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।