• শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন

উন্নয়ন বৈষম্যের শিকার নগরবাসী

আপডেটঃ : বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৭

রংপুর অফিস॥
রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে নগরীতে নাগরিকদের প্রধান সমস্যা ১. যানজট, বিগত মেয়রের আমলে ফোরলেন সড়ক করা হলেও তা মাত্র একটি। যার আয়তন সবখানে একই রকম নয়।
কমবেশী করার কারণেই অভিযোগ করেন অনেকেই। তা ছাড়া এ ফোরলেন সড়কের পার্শ্বের ফুটপাত হকারদের, সড়কের উপরের দোকানদারের মালামালের দখলে। রাস্তায় যত্রতত্র গড়ে উঠেছে রিক্সা,অটোরিক্সা,বাস-ট্রাক, মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড। নগরীতে অটো চলাচলের ক্ষেত্রে সুনির্দ্রিষ্ট কোন পরিকল্পনা ছাড়াই দেয়া হয়েছে অটোর চালানোর লাইসেন্স। ফলে যানজট নিত্যদিনের ও জনভোগান্তির। স্কুল কলেজ, কর্মমূখর মানুষের, রোগীবাহী যানবাহন, দূর্ঘটনায় দ্রুত চলাচলের যানবাহান ফায়ার সার্ভিস, প্রশাসনিক যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে কিংবা দ্রুত পৌছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। বেকায়দায় পড়তে হয়েছে ট্রাফিক পুলিশ বিভাগকে। স্বদিচ্ছা থাকলেও তার সুফল দিতে অনেক সময় ব্যর্থ হয় তারা। এ ছাড়া, যথেষ্ট পরিমানে ডাস্টবিন ব্যবস্থা, পাড়া মহল্লায় অলিগলিতে লাইটের অপর্যাপ্ততা, বিভিন্ন পাড়া মহল্লার অভ্যন্তরীন রাস্তাগুলোর বেহাল;দশা, মশা মাছি নিধনে নামকাওয়াস্তে ব্যবস্থা গ্রহন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিতে গিয়ে সময়ের চেয়ে বেশী সময় লাগিয়ে দূর্ভোগ সৃষ্টি চলমান। কেবল কুকুরের পাগলামী থামানোর ভেকসিন দায়িত্ব যথারিতি লক্ষনীয়।
এছাড়া নাগরিকদের অন্যান্য মৌলিক বিষয়ে দায়সারা ছিল। সরকার যথারীতি সাধ্যানুযায়ী উন্নয়নের বরাদ্দ দিলেও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঢিলেঢালা।
অথচ গত ২০১২ সালের ২০শে ডিসেম্বর নবগঠিত সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে রংপুরের মানুষ অনেক উৎসাহ উদ্দীপনা আর আশা আকাংখার মানুষগুলোকে নির্বাচিত করেছিল। ষোলআনা না হলেও যা হয়েছে তাতে খুব বেশী সন্তুষ্ট নন।
২০৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বিশাল সিটির ৩৩ ওয়ার্ডের  মানুষ সমান উন্নতির কথা ভাবছেন এ নির্বাচনে। ইতিপূর্বে ৫২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের রংপুর পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ড ছিল। সিটির অভ্যন্তরে বর্ধিত অংশে এখনো রয়েছে কাঁচা সড়ক। পাকা সড়কেও রয়েছে মাছ চাষের মত খানা খন্দকের। এ ব্যাপারে সাবেক রসিক মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু বলেন, যেসব এলাকায় উন্নয়ন হয়নি সেসব এলাকায় করও বৃদ্ধি করা হয়নি। চেষ্টা ছিলো কিন্তু উন্নয়ন করতে পারিনি। তবে আগামীতে নির্বাচিত হলে উন্নয়ন করা হবে। এদিকে নগরীর মাহিগঞ্জ ও নাছনিয়ার বিল এলাকায় ব্যস্ত চলাচলের  রাস্তার উপর বিশাল ময়লার ভাগাড়। দুর থেকে যেন পাহাড়। দূগন্ধে আশ পাশের এলাকার মানুষ অতিষ্ট। পথচারীদের নাক বন্ধ করে চলা ছাড়া উপায় নাই।
আলমগীর হোসেন, লিটন বলেন, আমাদের এলাকায় সড়কে নেই লাইট পোস্ট এবং কোথাও লাইট পোস্ট থাকলেও বাতি জ্বলে না। সড়ক রয়েছে ভাঙাচোরা। আমরা নামেমাত্র নগরীর বাসিন্দা। কোবারু এলাকার বাসিন্দা আল ইমরান,মজিবুর রহমান, আয়শা বেগম,বলেন, ‘আগোতে হামার ভালো আছিল। হামার এলাকা ইউনিয়ন আছিল তখন হামরায় ইলিপ পাছি। সিটি করর্পোরেশন হওয়ার পর থাকি হামরা ইলিপ আর পাইনা। বড়বাড়ি, মনোহরপুর এলাকার কবির মিয়া, রহমত আলীও বলেন, আমরা ৫ বছরে উন্নয়ন বৈষম্যের শিকার হয়েছি। শালবন এলাকার রতন সরকার, বলেন, লাইট পোস্ট আছে বাতি নেই। রাস্তা আছে ড্রেন নেই। অথচ ৫ বছরে বহুবার কাউন্সিলরকে বলেছি। পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ব্যাপারে মেয়রকে জানিয়েছি। এলাকাবাসী জড়ো হয়ে মেয়রের কাছে গেলেও মেয়র পদক্ষেপ না নিলে আমরা কি করতে পারি।
উত্তম এলাকার শামসুল, জলিল, অভিযোগ করে বলেন, তাদের দিকে মেয়র নজর দেয়নি। আমরা অবহেলিত । সিটি বাসিন্দা শমসের, আলম, রহমান, আইয়ুব, সালমা, সালেহাসহ অন্যরা বলেন, আমরা শুধু নামে সিটির বাসিন্দা হতে চাই না। তাই এবারের ভোট চিন্তাভাবনা করে দেবো।
নগরীর ৩৩ ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র ১ওয়ার্ডে নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র করা হয়েছে। বাকি ২৭ ওয়ার্ডে কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। নেই পানি সরবরাহের কোনো ব্যবস্থা। অথচ বাড়তি কর নেয়া হচ্ছে নাগরিকদের কাছ থেকে।

এ ব্যাপারে সিটি করর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তবে আরো সময় লাগবে। বর্ধিত এলাকার মূল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ