• রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৮:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি করতে দিল্লি বিমানবন্দ ব্যবহারে ভারতীয়দের আপত্তি গণতন্ত্র রক্ষায় নতুন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে : মঈন খান পেড়িয়ে গেলো ২৪ ঘণ্টা নেভেনি সুন্দরবনের আগুন, আরো ২-৩ দিন সময় লাগবে ফিলিস্তিনের পক্ষে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পতাকা উত্তোলন করবে ছাত্রলীগ আব্রামস ও ব্রাডলি ট্যাঙ্ক ধ্বংস, এক সপ্তাহে ইউক্রেনের ৪,২৮৭ সেনা নিহত অভিনয়ের সুযোগ পেতে গোপনাঙ্গ দেখাতে বলেন আয়ুষ্মানকে পরিচালক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে: খালিদ মাহমুদ ‘মা’ পদক পাচ্ছেন অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগম অপারেশনের নামে টর্চার সেলে পৈশাচিক নির্যাতন করে আনন্দ পেতো মিল্টন প্রয়োজন ২২ হাজার দক্ষ ধাত্রী, আছেন ২৫৫৭

৬০০ কর্মী ছাঁটাই গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে শতাধিক জিডি গাজীপুরে ওয়্যারহাউজের সামনে বিক্ষোভ

আপডেটঃ : শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

আকস্মিকভাবে কোন নোটিশ ছাড়াই ৬০০ কর্মীকে ছাঁটাইয়ের ঘটনায় গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে সারাদেশে শতাধিক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে তাদের কর্মস্থলে প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে। গ্রামীণফোনের শ্রমিক-কর্মচারী ট্রেড ইউনিয়নের (হাইকোর্ট কর্তৃক স্থগিত) সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান ইত্তেফাককে জানান, প্রথম শ্রম আদালতের মামলায় স্থায়ী স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে গ্রামীণফোন তাদের হয়রানি করছে। গতকাল সকাল থেকেই সারাদেশে কর্মরত কর্মীদের কাজে যোগদানে বাধা দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তারা গ্রামীনফোনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করলেও কেউ কথা বলেননি। ফলে বাধ্য হয়ে সারাদেশে শ্রমিক-কর্মচারীরা গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় শতাধিক জিডি করেছেন।
কর্মীদের অপর সংগঠন গ্রামীনফোন লিমিটেডের শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক কাইয়ুম শেখ ইত্তেফাককে জানান, কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রবেশে বাধা দেয়ায় তাত্ক্ষনিক তারা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জিপি হাউজে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা চেষ্টা করেও এডমিন ডিরেক্টর তানভীর, ট্রান্সপোর্ট জিএম আসাদুজ্জামান, অপর কর্মকর্তা অনিক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে রিসেপশনে বিষয়টি অবহিত করলে তারা জরুরি মিটিংয়ে আছেন যোগাযোগ করা যাবে না বলে তাদের জানিয়ে দেয়া হয়। কাইয়ুম শেখ বলেন, সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে গায়ের জোরে প্রভাব খাটিয়ে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ তাদের অফিসে প্রবেশ করতে বাধা দিচ্ছে।
গ্রামীণফোনের ঢাকা গাজীপুরের কালীগঞ্জের মটবাড়ি ওয়ারহাউজে কর্মরত অফিস সহকারী শরিফুল ইসলাম জানান, তাদেরকে বুধবার রাতেই বৃহস্পতিবার আর কর্মস্থলে না আসার কথা জানিয়ে দেয়া হয়। ওই রাতেই সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি দায়েরের পর গতকাল বৃহস্পতিবার থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সকালে কর্মস্থলে প্রবেশ করতে না পেরে গ্রামীণফোনের ওয়্যারহাউজে কর্মরত ৫৭জন অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেন। তিনি বলেন, তাদের অনেকেরই গ্রামীণফোনের দেয়া মোবাইল নম্বরটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
গ্রামীণফোনের একাধিক শ্রমিক-কর্মচারী থানায় দায়েরকৃত জিডি’র বরাত দিয়ে বলেন, কোনো প্রকার লিখিত নোটিশ ছাড়াই গ্রামীণফোন অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তাদের এভাবে হয়রানি করছে। তারা বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ মহলসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার কাছে আবেদন করবেন বলে জানান। ভুক্তভোগীরা জানান, সামান্য বেতন দিয়ে গ্রামীণফোন তাদেরকে এক যুগেরও বেশি কাজ করিয়েছে। এখন পথে নামিয়ে দেয়ার পায়তারা করছে। দীর্ঘ কর্মজীবনে বেতন না বাড়িয়ে এখন সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে তাদেরকে বের করে দিচ্ছে। অথচ তাদের চাকুরীর বিষয়টি এখন সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ারভুক্ত। আদালতের রায় আসার আগে তারা এটা করতে পারে না।
একাধিক ভুক্তভোগী জানান, বিগত ৪ বছর আগেও গ্রামীণফোন একইভাবে করে তাদের বের করে দেয়ার পাঁয়তারা করেছিল। সে সময়ে আদালতে মামলা দায়ের করলে এক সপ্তাহের মধ্যেই পুনরায় কর্মস্থলে যোগদান করতে দেয়া হয়। এরপর নানাভাবে কিছু শ্রমিকের মৃত্যু ও বাধ্যতামূলক অবসরের পর গতকাল থেকে কর্মরতদের কর্মস্থলে আর প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এতে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বোধ করছেন। ইতিমধ্যেই গ্রামীণফোনের হয়রানির শিকার হয়ে অনেক শ্রমিক-কর্মচারী শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গতকাল কর্মস্থলে প্রবেশে বাধা দেয়ায় অনেক শ্রমিক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানান কর্মীরা।
গ্রামীণফোনের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য :গতকাল দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত ‘বিনা নোটিশে গ্রামীণফোনে একদিনে ৬০০ কর্মী ছাটাই’ শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এমন কোন ঘটনা গ্রামীণফোনে ঘটেনি। আউটসোর্সড স্টাফরা তাদের কর্মী নয় দাবি করে প্রতিবাদে বলা হয়েছে, তাদের ছাটাই করার প্রশ্নই উঠেনা। ভেন্ডর কোম্পানি তাদের ছাঁটাইয়ের ক্ষমতা রাখে। গাজীপুরে ৫৭ আউটসোর্সড স্টাফকে ছাঁটাইয়ের অভিযোগ সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে ওয়্যারহাউজের নিরাপত্তা বিধি অনুযায়ী বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করতে বলা হয়। এর মধ্যে ৫৭জনকে বারবার তাগাদা দেয়ার পরও নিবন্ধন করেননি, তাই তাদের এন্ট্রি পাস নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। এটা ছাঁটাই নয়।
প্রতিবেদকের বক্তব্য : গ্রামীণফোনের কর্মীরা জানিয়েছেন, গত বুধবার সকালে তাদের বায়োমেট্রিক করতে বলা হয়। তারা এটা করতেও রাজি ছিলেন। তবে তাদের চাকরির বিষয়টি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন তাই কোনভাবে যেন আদালত অবমাননা না হয় সেদিকে কর্মকর্তাদের নজর রাখার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে পরবর্তীতে কোন আলোচনা ছাড়াই অফিসে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। কর্মীদের চাকরির বিষয়টি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন তাই আদালতের নির্দেশ ছাড়াই তাদের অফিসে ঢুকতে না দেয়া আদালত অবমাননার শামিল বলেই মনে করেন কর্মীরা। আর যাদের ছাঁটাই করা হয়েছে তাদের গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষই নিয়োগ করেছে। তারা গ্রামীণফোনের আইডি কার্ডই বহন করেন। ফলে তাদের ভেন্ডরের কর্মী বলা সঙ্গত নয়। আর এত কর্মী ছাঁটাই না হলে সারাদেশে তাদের বিরুদ্ধে শতাধিক জিডিও হতো না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ