কুয়াকাটার ক্ষুদে বিজ্ঞানী মাহবুবুর রহমান শাওন জ্বালানি সাশ্রয়ী চালক বিহীন সোলার সিস্টেম পরিবেশবান্ধব গাড়িসহ বিভিন্ন যন্ত্র আবিষ্কার করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন। বাংলাদেশ প্লানেটর কলেজের রোবোটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র শাওন প্রায় এক মাস ধরে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে গাড়িটি তৈরি করেন। গাড়িটি পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হয়েছে কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কে। শাওন ইত্তেফাককে জানান, কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয় গাড়িটি। ফ্লেক্সিবল সৌর প্যানেলের মাধ্যমে গাড়িটি সম্পূর্ণ জ্বালানি বিহীন ভাবে চলাচল করবে। আরডুইনো কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে এ গাড়ির যন্ত্রাংশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঐ নির্দেশনা অনুযায়ী গাড়িটি চলাচল করবে। তিনি জানান, মহাসড়কে সচরাচর চলাচলের জন্য আরো উন্নত প্রযুক্তি যুক্ত করলেই সাফল্য আসবে। বাহনটি অপর বাহন থেকে নিজেকে রক্ষা করেন ও প্রয়োজন অনুযায়ী গাড়িটির গতি বাড়ে এবং কমে। গতকাল গাড়িটি চলতে দেখে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস.এম. তাওহিদুল ইসলাম ইত্তেফাককে জানান, আরডুইনো কম্পিউটার প্রোগ্রামিং দিয়ে এ ধরনের কাজ করা যায়। তবে মাহবুবুর রহমান শাওনের এ আবিষ্কারে যদি নতুন উদ্ভাবনীয় বিষয় থাকে তাহলে অবশ্যই প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রকল্পের মাধ্যমে আবিষ্কারক যদি নির্ধারিত ফর্মে নতুন উদ্ভাবনের বিস্তারিত তুলে ধরেন তাহলে সকল প্রকার সহযোগিতার সম্ভাবনা রয়েছে। এভাবে অনেকেই তাদের নতুন নতুন উদ্ভাবনী এটুআই প্রকল্পের সহযোগিতায় বাস্তবায়ন করেছে।
এছাড়াও শাওন সিকিউরিটি এ্যালার্ম, মোবাইলের ব্যাটারির মাধ্যমে বিদ্যুত্ সাশ্রয়ী ফ্রিজ, সেন্সর লাইট, স্মার্ট সুইস, মোবাইল সুইস, ড্রোন বিমান, মোবাইলের মাধ্যমে সুইস অন অফ পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ২০১৫ সালে শাওন সি-প্লেন তৈরি করে পরীক্ষামূলকভাবে নদীতে চালান। তবে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা পেলে শাওন তার আবিষ্কৃত গাড়ি ও ইলেক্ট্রিকাল যন্ত্রপাতি বাণিজ্যিক ভাবে বাজারজাত করতে পারবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। শাওনের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানার মোয়াজ্জেমপুর গ্রামে।
শাওন সাংবাদিকদের জানান, ছোট বেলা থেকেই তার বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ ছিল। লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি ইলেক্ট্রিকাল যন্ত্রপাতির প্রতি আকর্ষণ বোধ করতেন। সেই থেকেই তার আবিষ্কারের নেশা। তবে তার বাবা-মা সব সময় তাকে নানা ভাবে সহযোগিতা এবং উত্সাহ যোগাতেন।
শাওনের বাবা মাদ্রাসা শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, সে ছোট বেলা থেকেই লেখাপড়ার চেয়ে নানা যন্ত্রপাতি নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করতো। ছেলের এমন আগ্রহ দেখে তাকে বাধা না দিয়ে যখন যা চেয়েছে কিনে দিয়েছি।