• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন

সিসিক নির্বাচন: বিএনপি আছে, বিএনপি নেই

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০২৩

কেন্দ্রের কঠোর নির্দেশনা, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কোনও পর্যায়েই বিএনপির কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না। দলের নির্দেশনা মেনে ইতোমধ্যেই নির্বাচন ‘বর্জন’ করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। চার বারের কাউন্সিলর ও সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদীও ‘না’ বলেছেন নির্বাচনকে। সর্বশেষ সোমবার (২২ মে) নির্বাচন ‘বয়কট’ করার ঘোষণা দেন তিন বারের কাউন্সিলর দিনার খান হাসু। নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে তারা দলের অন্য নেতাকর্মীদেরও ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তাদের সে আহ্বানে সবাই যে সাড়া দেননি তার প্রমাণ মিলেছে সোমবারই।

দিনার খান হাসু যে দিন ভোট বর্জনের ঘোষণা দিলেন সেদিনই মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপির তিন কাউন্সিলর। দলের নির্দেশনা না মেনে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিকুল হাদী, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনিম, ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রকিব তুহিন, ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরাহাদ চৌধুরী শামীম এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল।

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রার্থী হতে তৎপরতা শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ বেশ ক’জন কাউন্সিলরও মাঠে নামেন। তবে শুরু থেকেই নির্বাচনের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নেয় বিএনপি। দলটির সিদ্ধান্ত, সিটি নির্বাচনে মেয়র বা কাউন্সিলর কোনও পর্যায়েই দলের কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না। নগরের ৪২টি ওয়ার্ডে সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক দলের ৩২ নেতার কাছে নির্বাচন করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে চিঠিও দেওয়া হয়।

নির্বাচনে প্রার্থী হবেন এমন গুঞ্জন থাকলেও বিএনপির মনোনয়নে টানা দুই বারের মেয়র নির্বাচিত হওয়া আরিফুল হক চৌধুরীও শেষ বেলায় এসে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত জানান। শনিবার নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে জনসভা করে প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। এর আগে বৃহস্পতিবার বিএনপি নেতাদের মধ্যে প্রথম সিটি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কয়েস লোদী।

যারা নির্বাচন বর্জন করেছেন তাদের ভাষ্য, এই সরকারের অধীনে কোনও ‘পাতানো নির্বাচনে’ যাবেন না তারা। অপরদিকে সম্ভাব্য কাউন্সিলর পদপ্রার্থী বিএনপি নেতারা বলছেন, কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয় না। প্রার্থীরা দলীয় পরিচয়ও ব্যবহার করেন না। সাধারণ একজন নাগরিক হিসেবে এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে যে কেউ এতে প্রার্থী হতে পারেন। এলাকাবাসীর চাপে তারা প্রার্থী হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনে বর্তমানে ৪২টি ওয়ার্ড রয়েছে। গত নির্বাচনে ওয়ার্ড ছিল ২৭টি। সেবার ছয়টি সাধারণ ওয়ার্ডে এবং ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের একটিতে বিএনপিপন্থিরা কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তারা হলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডে সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে রেজাউল হাসান লোদী কয়েস, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে নজরুল ইসলাম মুনিম, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে এ বি এম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে আব্দুর রকিব তুহিন। এছাড়া সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন সদ্য বিদায়ী সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রোকসানা বেগম।

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম বলেন, এলাকার মানুষ তো আমাকে ছাড়ছে না। আমি এখানকার দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর। আর কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয় না।

বিএনপি নেতা ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের এ বি এম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, আমি এবারও প্রার্থী হচ্ছি।

মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিকুল হাদী বলেন, দল নির্বাচনে যাবে না। তবে এলাকাবাসীর চাপে আমি প্রার্থী হয়েছি।

বিএনপি নেতাদের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, বিএনপি এই সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচনেই যাবে না। আমরা এখন সরকার পতনের আন্দোলনে আছি। আমাদের প্রত্যাশা কাউন্সিলর পদে বিএনপির দায়িত্বশীল কেউ প্রার্থী হবেন না।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, সিলেট সিটি করপোরেশনে আগামী ২১ জুন ইভিএমে ভোট হবে। আজ মঙ্গলবার (২৩ মে) সিলেট সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের শেষ দিন। মনোনয়নপত্র বাছাই ২৫ মে ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১ জুন। প্রতীক বরাদ্দ হবে ২ জুন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ