লক্ষ্মীপুরে পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ায় সেলিনা আক্তারকে (৪২) বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী জসিম উদ্দিনের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। সোমবার (৫ জুন) দুপুরে সদর উপজেলার জকসিন বাজারে নিহতের ছেলে-মেয়ে ও এলাকাবাসীর ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী এ আয়োজন করা হয়। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নিহত সেলিনার চার সন্তান রোজিনা আক্তার, আসমা আক্তার, লাভলী আক্তার ও আবদুল আজিজ সৌরভ। এছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ মাহমুদ বাকী, বেলায়েত হোসেন, জকসিন বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল আজিম শাকিল, নিহত সেলিনার ভাই মুক্তার হোসেন ও নুর হোসেন মানববন্ধনে অংশ নেন ও বক্তব্য রাখেন। তারা হত্যার ঘটনায় জসিমকে অভিযুক্ত করে ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।
নিহতের সন্তান রোজিনা ও আসমা জানান, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড বাঞ্চানগর এলাকায় তাদের নিজস্ব বাসভবন রয়েছে। সেখানেই বাবা-মায়ের সঙ্গে তারা বসবাস করতো। তাদের বাবা জসিম এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত ছিল। এনিয়ে বাধা দেওয়ায় তাদের মা সেলিনাকে জসিম বিভিন্ন নির্যাতন করতেন। ৬ মাস আগে শাহীন আক্তার নামে ওই নারীকে বিয়ে করে। এতে তাদের মায়ের সঙ্গে জসিমের দাম্পত্য কলহ বেড়ে যায়। এরমধ্যেই বাঞ্চানগর এলাকার বাসভবনসহ জমি জসিমের নামে লিখে দেওয়ার জন্য স্ত্রী সেলিনাকে চাপ দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় সেলিনার ওপর নির্যাতন আরও বেড়ে যায়।
২৭ মে বিকেলে জসিম তার প্রথম স্ত্রী সেলিনাকে বাঞ্চানগর এলাকার বাসা থেকে গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের কাঁচারিবাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে জসিম ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাহিন পরিকলিপ্তভাবে সেলিনাকে মারধর করে। একপর্যায়ে জসিম মুখে বিষ ঢেলে সেলিনার মুখে বিষ ঢেলে দেয়। এতে ওই বাড়ির অন্যান্যরাও সহযোগিতা করেছে। পরে সেলিনাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে মরদেহ ফেলে রেখে জসিম পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ৩১ মে নিহত সেলিনার ভাই মুক্তার হোসেন বাদী হয়ে জসিম ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী শাহিনসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দেন। কিন্তু থানা পুলিশ অভিযোগটি নথিভূক্ত করেননি। এতে ৪ জুন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী অঞ্চল (সদর) আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি নিয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা রয়েছে। এজন্য পরবর্তী মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তখন পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।