ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরেই দিনাজপুরের হিলিতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে কেজিতে দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে পাঁচ টাকা করে। রোববার (৪ জুন) সকাল থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খুচরাতে যা ৯০ টাকা বিক্রি হয়েছিল বর্তমানে তা কমে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে দাম আরও কমে আসবে দাবি ব্যবসায়ীদের। এদিকে দাম কমায় খুশি নিম্ন আয়ের মানুষ।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা হামিদুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন ধরেই পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমুখী। রাত পোহালেই পেঁয়াজের দাম বাড়ছিল। রোববার সকালেই বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৯০টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছিল। রাতে পেঁয়াজ কিনতে গিয়ে শুনি ৮৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আমদানির খবরেই দাম কমতে শুরু করেছে। এটি ব্যবসায়ীদের কারসাজি নয়তো কি যেই, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবর বেরিয়েছে তখনই দাম কমতে শুরু করেছে। তাহলে কি রাতারাতি সরবরাহ বেড়ে গেলো এটি সম্পূর্ণ তাদের কারসাজি। এছাড়া পেঁয়াজের বাড়তি দামের কারণে আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষদের খুব সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছিল। বর্তমানে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দাম কমতে শুরু করেছে এতে আমাদের সুবিধা হয়েছে। দাম যেন আগের মতো স্বাভাবিক হয়, তাহলে আমাদের জন্য ভালো হয়।
হিলি বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শাকিল খান বলেন, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি না দেয়ায় ও দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে আসায় মোকামে রাত পোহালেই পেঁয়াজের দাম বাড়ছিল। যার কারণে আমাদেরকে বাড়তি দামে কিনতে হয়, আবার বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছিল। দেশি পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের ও শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ সব ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সন্ধ্যার দিকে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। যার কারণে আমরাও বাড়তি দামে পেঁয়াজ কেনা হলেও লোকশানের আশংকায় ইতোমধ্যেই পেঁয়াজের দাম ৫ টাকা কমিয়ে বিক্রি করছি। এছাড়া ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে ওই পেঁয়াজের দাম কম হবে। এ সময় এতো দাম দিয়ে এই পেঁয়াজ কেউ খাবে না। এতে করে আমাদের লোকশান গুনতে হবে, যার কারণে সব ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম কমিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এছাড়া মোকাম থেকে নতুন পেঁয়াজ ঢুকলে আগামীকাল সকালে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, দেশীয় কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে গত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়া বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এতে করে ১৬ মার্চ থেকে হিলি স্থলবন্দরসহ দেশের সবগুলো স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে রোববার (৪ জুন) কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশীয় পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের ও শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবসহ সব ভোক্তার স্বার্থ রক্ষায় পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। সোমবার (৫ জুন) থেকেই পেঁয়াজ আমদানিতে অনুমতি দেয়া হবে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।