দিনাজপুরের খানসামায় কমবেশি প্রতিটি ঘরে ঘরে চলছে সর্দি, জ্বর, কাশিসহ মাথাব্যথার প্রকোপ। ফলে কমিউনিটি ক্লিনিকসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ধরনের আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে ১২ বছর পর্যন্ত শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে এমন রোগের প্রভাব পড়ছে বেশি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বেশিরভাগ বাড়িতেই কেউ না কেউ জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত। তাদের বেশির ভাগই বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ কিনে সেবন করছেন। এভাবে অনেকে সুস্থ হয়েও উঠছেন। আবার কেউ কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গিয়েও চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডাক্তারদের ব্যক্তিগত চেম্বারগুলোতে এ ধরনের রোগীদের উপচেপড়া ভিড় হচ্ছে।
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সকালে টিকিটের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় রোগী ও তাদের স্বজনদের। এর মধ্যে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের ৪০ শতাংশই জ্বর নিয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছে।
৪ বছর বয়সীর শিশু ফারিহাকে ডাক্তার দেখানোর পর বাড়ি যাচ্ছেন মা উম্মে কুলসুম। তিনি জানান, আমার মেয়ে দুদিন থেকে খুবই জ্বর-সর্দি আর কাশিতে ভুগছে। এলাকার ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনে খাওয়া হয় কিন্তু তখনও জ্বর কমেনি তাই পাকের হাটে ডাক্তার দেখানোর জন্য নিয়ে গেছিলাম।
জ্বরে আক্রান্ত অটোভ্যান চালক জাহাঙ্গীর বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে গাড়ি চালিয়েছি। সকালে প্রচন্ড রোদ আবার বিকেলে ঝুমবৃষ্টি। কখনো ভ্যাপসা গরম, আবার হাল্কা ঠান্ডা শরীরে লেগে কয়েকদিন থেকে জ্বর নিয়ে ঘুরছি। পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করেও কোনো উপকার মিলছে না।
খানসামা বাজারের ওষুধ বিক্রেতা পারভেজ বলেন, গত দুই-তিন সপ্তাহ ধরে সর্দিকাশি-জ্বরের ওষুধ বিক্রি ব্যাপক বেড়ে গেছে। যা অবস্থা তাতে মনে হয় এখন ঘরে ঘরে জ্বর। এ ধরনের বেশির ভাগ রোগী বা রোগীর স্বজন চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে তাদের কাছে এসে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ নিয়ে যাচ্ছেন।
তবে যে কোনো কারণেই জ্বর-সর্দি দেখা দিক না কেন? অবহেলা না করে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা.শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, আবহাওয়াজনিত কারণে হঠাৎ সর্দি-জ্বরের প্রকোপ একটু বেড়েছে। এ নিয়ে আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। এই সর্দি-জ্বরের জন্য দোকান থেকে এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট খাওয়া যাবে না। আর জ্বর হলে অবশ্যই সর্বদা তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে এবং বাসায় বিশ্রামে থাকতে হবে। আর যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে এসে ডাক্তারদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।