৪শ মিটার খাল খননে বড়াইগ্রাম ও লালপুর উপজেলার কৃষকদের চারটি বিলের প্রায় ৮০০ হেক্টর জমির ধান ও কমপক্ষে ৫০০ বাড়ি জলাবদ্ধতার কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খাস ও ব্যক্তিমালিকানা জমির উপর দিয়ে আট ফুট প্রস্থ এ খাল খনন করা হয়। দৌলতপুর গ্রামের শামসুল ইসলাম তার ব্যক্তি মালিকানা দেড় বিঘা এবং তার ভাগিনা ইসমাইল হোসেনের বাড়ির ভিটার দুই শতাংশ জমি জনস্বার্থে ছেড়ে দিলে সরকারি খরচে খাল খনন করা হয়েছে। এতে জলাবদ্ধতা থেকে বাড়ি ও ফসল রক্ষা পাওয়ায় দারুণ খুশী এ দুই উপজেলার ভুক্তভোগী হাজার হাজার মানুষ।
গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, জলাবদ্ধতার কারণে দুই উপজেলার মহেশ্বর, টিটিয়া মাঝগ্রাম, কচুয়া ও সুন্দরবাড়িয়া মৌজার চারটি বিলে প্রতি বছরই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো। এতে কৃষকরা জমিতে চাষাবাদ করতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। এবারও জলাবদ্ধতায় চারটি বিলের প্রায় ৮শ হেক্টর জমির ধান ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়। এছাড়া বিলের পানি উপচে জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে আরও কমপক্ষে ৫০০ বাড়ি। বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে জানালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আট ফুট প্রস্থ ও ৪শ মিটার দীর্ঘ একটি খাল খননের উদ্যোগ নেন।
রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে দুদিন কাজ শেষে শনিবার খালটি খনন শেষ হয়েছে। খনন করা খাল দিয়ে দ্রুত পানি নেমে যাচ্ছে। এতে বাড়িঘর ও ফসল রক্ষা পাওয়ায় দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ দারুণ খুশী। এ সময় লালপুর উপজেলার মাঝগ্রামের কৃষক আতাউর রহমান বলেন, বিলে আমার ১৭ বিঘা জমি রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ধান ডুবে যায়। এবারও ধানের শীষ বের হয়েছে, কিন্তু অতিবৃষ্টিতে কিছু জমির ধান ডুবে গেছে, বেশির ধান জমির ধান ডোবার উপক্রম। তবে খাল খননের পর দ্রুত পানি নেমে যাচ্ছে। এতে আমার জমির ধানগুলো রক্ষা পাবে। তার মতো অপর কৃষক ইসমাইল হোসেন ও আব্দুল কাদের মল্লিকসহ সেখানে উপস্থিত আরও ১০-১২ জন চাষি একই রকম কথা বলেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) বোরহান উদ্দিন মিঠু জানান, সমস্যাটি জানার পর কাঁচা রাস্তা সংলগ্ন খাস জমি বের করা হয়েছে। এছাড়া দৌলতপুর গ্রামের শামসুল ইসলাম তার ব্যক্তি মালিকানা দেড় বিঘা এবং তার ভাগিনা ইসমাইল হোসেনের বাড়ির ভিটার দুই শতাংশ জমি জনস্বার্থে ছেড়ে দিলে সরকারি খরচে খাল খনন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রাসেল জানান, জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে খালটি খনন করতে হয়েছে। এতে দুই উপজেলার বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতার সমস্যা স্থায়ীভাবে সমাধান হল।