• বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১৫ অপরাহ্ন

নিজেই প্রতারণা করে উল্টো ডিবির ডিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ!

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আব্দুল আহাদের বিরুদ্ধে জোর করে সাড়ে তিন কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন জসিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। তবে ডিবির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জসিম নিজেই একজন প্রতারক। প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ভুক্তভোগীকে অর্থ ফেরত দেওয়ার পর তিনি ডিবি’র ডিসির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

সম্প্রতি জসিম উদ্দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগে বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগের ডিসি আব্দুল আহাদের নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মালিবাগের ডায়না হোটেল থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে একটি সাজানো মামলা দিয়ে ডিবি হেফাজতে নির্যাতনের মাধ্যমে সাড়ে তিন কোটি টাকার একটি চেক নেওয়া হয়। তাকে গ্রেফতারের পর ডিবির কর্মকর্তারা তার স্ত্রীকেও বাসা থেকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসে। সাড়ে তিন কোটি টাকার চেক না দিলে স্ত্রীকেও জেলে পাঠানোর হুমকি দেয়। পরে তার এক চাচার মাধ্যমে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। আদালতে দুই পক্ষের উকিলের মাধ্যমে বসে একটি আপসনামার মাধ্যমে তিনি জামিনে কারামুক্ত হন। আদালতে তার কাছ থেকে জোর করে চেকে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

এদিকে গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগ বলছে, মানস দাস নামে এক ব্যক্তির কাছে শুল্কমুক্ত স্বর্ণ বিক্রির কথা বলে মোট চার কোটি ১০ লাখ টাকা নেন জসিম উদ্দিন। টাকা পরিশোধের পর থেকেই জসিম উদ্দিনের মোবাইল বন্ধ পান মানস। এক পর্যায়ে স্বর্ণ দিতে কালক্ষেপণ করায় তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে গত ১৩ অক্টোবর যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের হওয়ার পরপরই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগের একটি দল তাকে মালিবাগের ডায়না হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তাকে আদালতে সোপর্দ করে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এসময় তার মোবাইল ফোনে অসংখ্য স্বর্ণের বারের ছবি ও বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে স্বর্ণের বার বিক্রির বিষয়ে কথপোকথনের রেকর্ড পাওয়া যায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বর্ণের বার বিক্রির কথা বলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণার কথাও স্বীকার করেন। পরবর্তীতে দ্বিতীয় দফায় এক দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বাদী ও বিবাদী তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে ঘটনাটি মীমাংসা করেছে। এমনকি আসামি জসিম উদ্দিন আদালতের মাধ্যমেই বাদীকে তিন কোটি ৬০ লাখ টাকার চেক দিয়েছেন। এখানে ডিবি পুলিশের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না বলে জানায় ডিবির ওয়ারী বিভাগ।

বাদি পক্ষের আইনজীবী আবরার খান তসলিম বলেন, আদালত নিজে আমার হেফাজতে চেকটি দিয়েছেন। আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে জসিম উদ্দিন আইনজীবীর উপস্থিতিতে আপসনামা ও চেকে স্বাক্ষর করেছেন। এখানে জোর করার কোনও সুযোগ নাই। আসামির আইনজীবী ও তার স্ত্রীর উপস্থিত ছিলেন। আদালত চেক দেওয়ার শর্তেই তার জামিন মঞ্জুর করেছেন।

এদিকে জসিম উদ্দিনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আব্দুল আহাদ বলেন, যে কেউ যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতেই পারে। তদন্তেই সত্য-মিথ্যা বেরিয়ে আসবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ