রংপুর প্রতিনিধি॥
রংপুর জেলা প্রশাসক অফিসের জেএম শাখার অফিস সহকারী শামসুল ইসলাম ডিসির স্বাক্ষর জাল করে অবৈধভাবে দেয়া ভূয়া লাইসেন্সের আরো ৪৯ টি অস্ত্র জব্দ করেছে দুদক। গতকাল মঙ্গলবার রংপুর দুদক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপ-পরিচালক মোজাহার আলী সরদার। তিনি জানান গত ২ আগস্ট থেকে অস্ত্র ও লাইসেন্স জব্দ শুরু হয়। এ পর্যন্ত ৩১৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ৩ হাজার ৫৩০ কার্তুজ জব্দ করা হয়েছে । এর মধ্যে ২৪৮টি শর্টগান এবং ৬৫ টি একনলা বন্দুক রয়েছে। লাইসেন্সধারিরা ১২টি আগ্নেয়াস্ত্রের দোকান থেকে এসব অস্ত্র ক্রয় করেছিলেন। এর মধ্যে ৮টি দোকানের আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয় বিক্রয় সংক্রান্ত রেজিস্টারসহ সকল রেকর্ডপত্র জব্দ করা হয়েছে। আরো ৪০ থেকে ৫০টি অবেধ লাইসেন্স ও আগ্নেয়াস্ত্র জব্দের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো জানান,রংপুর জেলা প্রশাসক অফিসের জেএম শাখার অফিস সহকারী শামসুল ইসলাম এবং ওই শাখার ভলিউম থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত ৩’শ বেশি ভূয়া অস্ত্রের হদিস পাওয়া গেছে। আগ্নোয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ থাকার সময় তিনি তা দিয়েছেন। যা গুরুতর অপরাধ। গ্রেপ্তারকৃত শামসুল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে অস্ত্র ক্রেতাদের নাম ঠিকানা বলেছে। এছাড়া শামসুল ইসলামের অস্ত্র ক্রেতা সংগ্রহের মূল হোতা আব্দুল মজিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের দেয়া নাম ঠিকানা অনুয়ায়ী দুদক অস্ত্র ক্রেতাদের নোটিশ দিয়ে অস্ত্র জমা দিতে বলে। সেই ধারাবাহিকতায় অস্ত্র জব্দ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, শামসুল ইসলাম রংপুর ডিসি অফিসের জেএম শাখার অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে ডিসি সই জাল করে ভুয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দিয়েছেন তিনি। দুদক ও পুলিশ তাকে ৩ দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে অস্ত্র বিক্রির কথা স্বীকার করেন। মামলাটি তদন্ত করছেন দুদকের সহকারী পরিচালক আতিকুল ইসলাম। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা অমূল্য চন্দ্র রায় বাদি হয়ে মামলা করেন। পরে কোতয়ালী থানায় অস্ত্র আইনে আরো একটি মামলা করা হয়। মামলাটি পরে দুদকে স্থানান্তর করা হলে রংপুর র্যাব-১৩ সদস্যরা গত ৬ জুলাই শামসুল ইসলামকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল থেকে তার সহয়োগী আব্দুল মজিদকে গ্রেপ্তার করা হয়।