দেশের প্রথম আধুনিক নগর গণপরিবহন হিসেবে মেট্রোরেল উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পূর্ণমাত্রায় সেবায় আসায় যাত্রী সংকটে পড়েছে সংশ্লিষ্ট রুটের বাসগুলো। তীব্র যানজটের এই নগরে সময় বাঁচাতে এসব রুটের যাত্রীরা মেট্রোরেলমুখী হওয়ায় টিকতে পারছে না সড়কের গণপরিবহন। বিকল্প উপায় বা সেবার মান বাড়িয়ে যাত্রী টানার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা থাকায় আগের মতো মুনাফা অর্জন করতে পারছেন না বাস মালিকরা, অনেকে গুনছেন লোকসানও।
কিন্তু ‘রুট পারমিট’ জটিলতায় বাসের রুটও পাল্টাতে পারছেন না অনেক মালিক। ফলে যাত্রী সংকটের বিষয়টি এখন তাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে মালিক সমিতি বলছে, সংকট আছে, সমাধানের বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের উদ্বোধন করা হলে যাত্রী সংকট শুরু হয় এই রুটের বাসগুলোতে। সড়কে উত্তরা-আগারগাঁও রুটে যাত্রী সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকায় এই রুটে চলাচল করা বাসের সংখ্যাও বেশি নয়।
ফলে মেট্রোরেলের কারণে যাত্রী হারালেও বাসের সংকট সেভাবে সামনে আসেনি। ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ উদ্বোধনের পর পূর্ণমাত্রায় যাত্রী সেবা শুরু করে মেট্রোরেল। বিপুল সংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করায় এই রুটগুলোতে চলাচল করা বাসের সংখ্যাও অনেক। তবে মেট্রোরেল যেখানে যাত্রীদের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে যাত্রী সংকটে পড়েছে বাসগুলো।
এমআরটি-লাইন ৬ উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশনে চালু রয়েছে। সেগুলো হলো— উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় এবং মতিঝিল। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি থেকে সকাল হতে রাত পর্যন্ত চলাচল করছে মেট্রোরেল।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে। মেট্রোরেল যানজটের ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় ‘ভালো বিকল্প’ হয়ে উঠেছে। যানজটের কারণে বাসে যথাসময়ে নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছার কোনও নিশ্চয়তা নেই। যানজটের কারণে সময়ের অপচয় আর ভোগান্তিতে পোহাতে হয় নগরবাসীকে। নিত্যদিনের এই চিত্র দেখে দেখে মানুষ এখন ক্লান্ত। এর বিপরীতে মেট্রোরেলে উত্তরা থেকে মতিঝিলে নির্বিঘ্নে পৌঁছানো যাচ্ছে দ্রুত সময়ে। নেই যানজট, আছে স্বস্তি। সে কারণে বাসের যাত্রীরা মেট্রোরেলে ঝুঁকছেন।