• বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন

থেমে থেমে গোলাগুলি রাতভর , সকালে বিকট শব্দে কাঁপল টেকনাফ সীমান্ত

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার পূর্ব ও দক্ষিণাংশের ওপারে মিয়ানমার সীমান্তে শুক্রবার রাতভর থেমে থেমে গোলাগুলির আওয়াজ শোনা গেছে। শনিবার সকালে দু’টি বিকট শব্দে এপারের মাটি কেঁপে উঠে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

টেকনাফের দক্ষিণাংশে থাকা সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপ এলাকার বাসিন্দারা বলেন, গতকাল দিবাগত রাত ১টা থেকে আজ সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তে থেমে থেমে গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পান তারা। মাঝেমধ্যে মাটি কাঁপানো শব্দও শুনেছেন। তবে আজ সকালবেলা প্রায় এক ঘণ্টা প্রচুর গোলাগুলিতে সীমান্তের এপারের মানুষের ঘুম ভেঙেছে।

শাহপরীর দ্বীপের ওপারে মিয়ানমারের মংডুতে সকালে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে। এর কিছুক্ষণ পর বিকট দু’টি শব্দে কেঁপে উঠেছে সীমান্ত এলাকা।

শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা রহমত উল্লাহ বলেন, ‘মিয়ানমারে রাতভর থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। তবে আজ সকালে দু’টি বিকট শব্দে এপারের মাটি কেঁপে উঠেছে।’

সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, মিয়ানমারের সাথে সেন্টমার্টিনের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। দূর থেকে গুলির আওয়াজ ভেসে আসছে। সকালে দু’টি বিকট শব্দ পাওয়া গেলেও ৮টার পর নতুন করে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি।

এমন অবস্থায় আতঙ্কে রয়েছেন টেকনাফ সীমান্তে বসবাসরত বাংলাদেশীরা। টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, রাতভর থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ কানে ভেসে আসে। এ জন্য স্থানীয় লোকজন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। কারণ সম্প্রতি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকার বিভিন্ন জায়গায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, নাফ নদীর পূর্ব ও দক্ষিণাংশে রাখাইন রাজ্য। যেসব স্থান থেকে গুলির আওয়াজ আসছে, সেখানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুর শহরের আশপাশের মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল্লাহপাড়া, মাংগালা ও ফাদংচা এলাকা অবস্থিত। এসব এলাকায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) কয়েকটি চৌকি (ক্যাম্প) রয়েছে।

এ বিষয়ে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো: মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে দু’টি গ্রুপের মধ্যে থেমে থেমে রাতভর গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন সীমান্তে থাকা বিজিবির সদস্যরা। সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের সঙ্ঘাতময় পরিস্থিতির কারণে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল বাড়ানো হয়েছে। সীমান্তে বসবাসরত মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল ভোর ৪টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টেকনাফের দক্ষিণাংশের ওপারে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে থেমে থেমে গুলির আওয়াজ শোনা যায়। গুলির আওয়াজের সাথে কয়েকটি স্থানে ধোঁয়া উড়তেও দেখা যায়।

এদিকে চুক্তির মাধ্যমে মিয়ানমারে ফিরে গেছেন ৩৩০ জন বিজিপি সদস্য, সেনা সদস্য, কাস্টমস কর্মকর্তা এবং ইমেগ্রেশন অফিসার। অনেকটা প্রাণ ভয়ে সশস্ত্র অবস্থায় বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল তারা।

এর আগেও বিজিপি সদস্য পালিয়ে গিয়েছিল চীন এবং ভারতে। তাদেরও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হয় মিয়ানমারে। এ ক্ষেত্রেও ৩৩০ জনের ক্ষেত্রে ভাগ্যে কী ঘটবে তা হয়তো তারা জানে না। নিজ দেশে যাওয়ার পর তাদেরও বিচারের মুখোমুখি হতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ