কয়েক দিন শান্ত থাকার পর মিয়ানমার অভ্যন্তরে সংঘাতে গোলাগুলি ও ভারী গোলাবর্ষণের শব্দে আবারও কেঁপে উঠল কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া এবং সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ সীমান্ত। রোববার রাত থেকে আজ সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে গোলগুলির এ শব্দ শোনা গেছে।
স্থানীয়রা দাবি করছেন, রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের উত্তরে নাকপুরা এলাকা এবং পূর্বে ধনখালী, হাসুরাতা, নাইক্ষ্যংদিয়া, গর্জনদিয়া ও সংক্ষদাবিল এলাকায় চলমান সংঘাতই এসব বিস্ফোরণের কারণ।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, কয়েকদিন সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত টানা ভারি অস্ত্রের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনোয়ারী বলেন, হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মায়ানমারের ওপার থেকে ব্যাপক গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। নাফনদীতে যারা মাছ শিকার করছিলেন তারা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসে। জেলেদের আতঙ্ক কাটছে না। বেশ কয়েকদিন সীমান্ত শান্ত ছিল।
টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, রাতে বিকট শব্দের মর্টার শেলের বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, কুলালপাড়া, ডেইলপাড়া, হাঙ্গারডেইলসহ অন্তত ১৩টি গ্রাম। এতে লোকজনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ জেটিঘাটের ইজারাদারের টোল আদায়কারী মোহাম্মদ ছিদ্দিক জানান, সোমবার ভোরে সেহেরির সময় নাফ নদের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে বেশ কয়েকটি গোলাগুলি ও ভারী গোলাবর্ষণের শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন। সকাল থেকে ভারী মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। এ ছাড়া এখনও মাঝে মাঝে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে নাফ নদে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা আতঙ্কে রয়েছেন।
বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘ওপারে সংঘাতের কারণে মাঝে মাঝে এপারে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। তবে রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছে বিজিবি। বিশেষ করে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদ ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।’