• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

সততা স্টোর ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ

আপডেটঃ : শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৭

বিশ্বের নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর একটি হলো আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। এ দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ; দেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান। দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উদাহরণ। অধিক জনবহুল এই দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। আমরা স্বপ্ন দেখছি ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে এ দেশটিই হবে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর একটি। এত এত অগ্রগতির এ দেশটিতে আমাদেরকে পীড়া দেয় যে একটি বিষয় সেটি হলো—দুর্নীতিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান। দুর্নীতির র্যাংকিংয়ে ১৭৬টি অবস্থানের মধ্যে আমাদের দেশ ১৪৫তম। অর্থাত্ দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান তালিকার নিচের দিকে। আমাদের দেশের কোনো নাগরিকই দেশকে এ অবস্থানে দেখতে চায় না। সম্মিলিতভাবেই আমাদের দেশকে এ কলঙ্কজনক অবস্থান থেকে টেনে তুলে আনতে হবে; করতে হবে কলঙ্কমুক্ত। এ কাজটি করতে গিয়ে আমরা কথা বলছি শুদ্ধাচার কৌশল নিয়ে, প্রতিষ্ঠা করেছি একটি কমিশনও। সরকারের সকল সংস্থাই কম-বেশি চেষ্টা করছে দেশকে কলঙ্কমুক্ত করতে।

 

কিন্তু প্রশ্ন হলো-কীভাবে এটি কার্যকরী হবে। এ প্রশ্নের উত্তরে আমরা লক্ষ্য করি যে, দুর্নীতিতে জড়িতদের আমরা বিভিন্ন উপায়ে দুর্নীতি থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছি। এর সুফলও আমরা কিছু না কিছু পাচ্ছি। তবে পাশাপাশি সুদূরপ্রসারী একটি পদক্ষেপ নেওয়া খুবই প্রয়োজন বলে মনে করছি। আমাদের এমন কিছু করতে হবে যাতে আমাদের আগামী প্রজন্ম হবে সত্ ও দুর্নীতিমুক্ত। এ ক্ষেত্রে যে জায়গাটাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে, তা হলো আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো। নৈতিকতা সম্পন্ন জাতি গড়তে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকেই। কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়ার একটি সহজ ও সুন্দর উপায় হতে পারে ‘সততা স্টোর’।

 

নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এটি একটি স্টোর বা দোকান—যেখানে থাকবে অনেক অনেক পণ্য এবং হবে বেচা-কেনাও। এ স্টোরে বিক্রয় হবে খাতা, কলম, পেন্সিল, ইরেজার, জ্যামিতি বক্স, চকোলেট, বিস্কুট, বই, খাবার পানির বোতল, স্ট্যাপলারসহ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সকল দ্রব্যই। তবে এ স্টোরের অবশ্যই থাকবে কিছু বিশেষত্ব। যেমন ধরুন, সাধারণ স্টোরগুলোতে থাকে ক্রেতা-বিক্রেতা কিন্তু সততা স্টোরে ক্রেতা দৃশ্যমান হলেও বিক্রেতা থাকবে না দৃশ্যমান। এ স্টোরের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো এখানে বিক্রেতা হলো বিবেক, নৈতিকতা, সততা, চরিত্র, মনুষ্যত্ব ও সর্বোপরি সত্যিকারের মানুষ গড়ার ইঙ্গিত। একইভাবে এ স্টোরের সবচেয়ে বেশি মূল্যবান পণ্যটিও হলো বিবেক, নৈতিকতা, সততা, চরিত্র, মনুষ্যত্ব ও সত্যিকারের মানুষ গড়ার ইঙ্গিত। সেটি কীভাবে? সততা স্টোর হচ্ছে বিক্রেতাবিহীন দোকান; যা স্কুল ক্যাম্পাসেই সুবিধাজনক স্থানে স্থাপন করা যায়। স্কুল চলাকালীন শিক্ষার্থীদের হঠাত্ কোনো শিক্ষা উপকরণ প্রয়োজন হলে তাদেরকে স্কুলের বাইরে যেতে হবে না। এই দোকানে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় সকল পণ্যই থাকে, প্রতিটি পণ্যের গায়ে বিক্রয়মূল্য লেখা থাকে এবং টাকা রাখার জন্য একটি বাক্স থাকে। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে পণ্যটির নির্ধারিত মূল্য টাকা রাখার বাক্সে জমা রাখে। প্রতিটি স্কুলে একজন করে শিক্ষক নির্দিষ্ট করা থাকে এই দোকান তত্ত্বাবধানের জন্য। সকালবেলা এসে ওই শিক্ষক কী কী পণ্য আছে তার একটি হিসাব করবেন এবং বিকেলে হিসেব করবেন কত টাকা বিক্রি হলো এবং কী কী পণ্য রয়ে গেল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ