• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ অপরাহ্ন

বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড়ে ৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০২৪
ছবি সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘর থেকে সুন্দরবন, বেড়িবাঁধ থেকে মৎস্যঘের- সবখানেই রিমালের ক্ষতচিহ্ন। ঘূর্ণিঝড়ে এক নারী মারা গেছেন। জেলায় মানুষের ৪৫ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশপাশি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে জলোচ্ছ্বাসে বণ্যপ্রাণীগুলো আবাস্থল হারিয়ে ফেলেছে।

গোটা জেলায় ঝড়ের তাণ্ডবে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। জেলার ৭৫টি ইউনিয়নের সবকটিতেই রিমালের ক্ষত রয়েছে। টাকার অংকে ক্ষতির পরিমাণ কোটি কোটি টাকা। জেলায় ৫ লাখ মানুষ রিমালের তাণ্ডবে আক্রান্ত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন জানিয়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, রিমালের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে তাদের দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। দুর্গত মানুষরা বলছেন, রিমাল দীর্ঘ সময় ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে। ঝড়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি আর জলোচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে সহায়-সম্পদ। রিমালের মতো দীর্ঘ সময়ের ঝড় তারা আগে দেখেননি।

জানা গেছে, রোববার (২৬ মে) দুপুরের দিকে জোয়ারে নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৮ থেকে ১০ ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। জোয়ারের সময় সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। বনের মধ্যে দিয়ে ৭ থেকে ৮ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। রিমাল প্রথমে সুন্দরবনে আঘাত হানে। দীর্ঘ সময় ধরে সুন্দরবনে তাণ্ডব চালিয়ে রিমাল উপকূলে আঘাত হানে।

জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের বাঘ, হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী তার আবাসস্থল হারিয়ে দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করে। পানিতে বেশকিছু হরিণ ভেসে গেছে। আবার পানিতে ডুবে হরিণ মারা গেছে। লবণ পানি প্রবেশ করে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ৮০টি মিষ্টি পানির পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, রিমালের তাণ্ডবে বাগেরহাট জেলায় ৪৫ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে ১০ হাজার বাড়িঘর সম্পূর্ণ এবং ৩৫ হাজার বাড়িঘরের আংশিক ক্ষতি হয়। শরণখোলায় সোমবার বিকালে গাছচাপায় ফজিলা বেগম (৫৫) নামে এক নারী নিহত হন। রিমালের আঘাতে জেলায় ৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে ছিল।

মোহা. খালিদ হোসেন বলেন, জেলার ৭৫টি ইউনিয়নের সবকটিতেই রিমালের ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। দুর্যোগকালীন সময়ে জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ৭০ হাজার মানুষ আশ্রয় নেয়। সেই সঙ্গে মানুষ তাদের গবাদি পশুও আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসে। আশ্রয় নেওয়া দুর্গত মানুষকে শুকনা খাবারের পাশাপাশি খিচুড়ি এবং নানা ধরনের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

মোহা. খালিদ হোসেন আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলায় তাৎক্ষণিকভাবে ৭৫ মেট্রিক টন চাল, ১৯ লাখ টাকা, ১০ হাজার ১০০ কেজি চিড়া, ৭০০ কেজি গুড়, ২০ হাজার প্যাকেট বিস্কুট, ৮৪০ লিটার পানি দেওয়া হয়। প্রাথমিক তালিকায় ১০ হাজার বাড়িঘর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ৩৫ হাজার বাড়িঘরের আংশিক ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেছে। জেলায় মোট ৫ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ