উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ॥
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় কচিয়ার বিলের তের একর সরকারি সম্পত্তি নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধ বেধেছে। বিলের পানি কমে আসায় তা আরো জোরালো হচ্ছে। এখন সেখানে মাঝে মধ্যেই উত্তেজনা দেখা দিচ্ছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সরকারি প্রশাসন থেকে সেখানকার পরিস্থিতির উপর সতর্ক নজরদারি রাখা হচ্ছে বলে জানানো হয়। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের জালশুকা মৌজায় কচিয়ার বিলে জমির পরিমান ১৩ দশমিক ৩ শতক। বছরের বেশির সময় বিলের জমি জুড়ে পানি জমে থাকে। এতে প্রাকৃতিক ভাবেই প্রচুর পরিমান মাছ জন্মে। প্রায় চার যুগ ধরে এলাকার উনুখা, পাঠানপাড়া ও জালশুকা গ্রাম তিনটির সাধারণ জনগন বিলের জমি রক্ষনাবেক্ষন করে বলে জানা যায়। এ বিলের মাছ বিক্রির টাকা তিনটি মসজিদ, দুটি কবরস্থান ও দুটি মাজার শরীফের উন্নয়নে ব্যয় হয়ে আসছে বলে জানা গেছে। বিগত ১৯৭০ সালে এ সম্পত্তির মধ্যে জালাল উদ্দিন আকন্দ ৩দশমিক ২৫ শতক ও মিনহাজ উদ্দিন মন্ডল ৩ দশমিক ২৬ শতক জমি ক্রয়সুত্রে মালিক হন। এরা জমি ক্রয়ের মাস পাচেক পরেই দু’জনই তাদের পুরো ৬ দশমিক ৫১ শতক জমি এলাকার দুটি মসজিদের নামে ওয়াবফ করে দেন। মসজিদ দুটি হলো জালশুকা মসজিদ ও উনুখা মসজিদ। সে থেকেই এ মসজিদ দুটি সহ পাঠানপাড়া মসজিদ, উনুখার দুটি কবরস্থান এবং হযরত ওয়াহেদ আলী পাগলাপীর মাজার শরীফ ও হযরত শাহ জামাল মাজার শরীফের উন্নয়নে বিলের মাছ বিক্রির টাকা ব্যয় হয়ে আসছে। এদিকে এ সম্পত্তির মধ্যে ৬ একর ৬৬ শতক জমি সরকারী ভাবে লীজ দেয়া হয়েছে। লীজ গ্রহিতা দু’জন হলেন আগে মসজিদের নামে ওয়াকফ করে দেয়া দাতা মেনহাজ উদ্দিনের ছেলে মোজাহার উদ্দিন ও জালাল উদ্দিনের ছেলে ফরহাদ আলী গং বলে জানা যায়। চলতি বাংলা ১৪২৪ সালের জন্য ফরহাদ আলী গং ৪ একর ৬৬ শতক জমির লীজ নবায়ন করে নিয়েছেন। অপরদিকে মোজাহার উদ্দিন তার লীজ নবায়ন করেনি। স্থানীয় ভুমি অফিস সূত্রে বিলের বাকী ৭ একর জমি কোন লীজ হয়নি। এ সম্পত্তি কে বা কারা ভোগ দখল করছেন তা সঠিক ভাবে জানা নেই। বিলের জমি নিয়ে বিরোধে গত মাস দেড়েক আগে সেখানে লাল পতাকা উড়িয়ে রাখা হয়েছিল। এছাড়া গ্রাম তিনটির মসজিদ কমিটির পক্ষের লোকজন বিলের জমি দখলের চেষ্টা চালায়। স্থানীয়রা জানায়, লীজ গ্রহিতা এ সম্পত্তির ভোগ দখলেই যেতে পারেনি। এদিকে লীজ গ্রহিতা ফরহাদ গং এর পক্ষে এ সম্পত্তির ভোগ দখলে যেতে সরকারের বিভিন্ন মহলে আবেদন জানিয়েছেন বলে জানানো হয়। তিনি আরো জানান, সরকারের কাছ থেকে এ সম্পত্তি লীজ নিয়েছেন সে কারণে বিভিন্ন ভাবে বাধা পেয়ে সম্পত্তির ভোগ দখলে যেতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন। অপরদিকে মসজিদ কমিটির পক্ষে একজন আব্দুল করিম মন্ডল জানান, বিলের মাছ বিক্রির টাকা ব্যক্তিগত ভাবে কেউ ভাগ বাটোয়ারা করে নেয় না। এলাকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে তা ব্যয় করা হচ্ছে। গত মাস খানেক আগে বিলের এ সম্পত্তি নিয়ে মসজিদ গুলোর পক্ষের লোকজন ও লীজ গ্রহিতাদের মধ্যে বেশ উত্তেজনা দেখা দেয়। উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সন্দ্বীপ কুমার সরকার জানান, কচিয়ার বিলের বিষয়াদি তিনি জেনেছেন। সেখানে যেন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এর জন্য স্থানীয় সরকারী প্রশাসন থেকে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ ও নজরদারী রাখা হচ্ছে।