‘ইমার্জেন্সি’ সিনেমার রিলিজ ক্রমশই জটিল হচ্ছে। মুক্তির আগেই আইনি বিপাকে পড়েছেন কঙ্গনা রানাউত। ৬ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে আসার কথা ছিল। কিন্তু লাগাতার বিতর্কের জেরে ‘ইমার্জেন্সি’র রিলিজ আপাতত হচ্ছে না! সেন্সর বোর্ডের হস্তক্ষেপ দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করেছিল শিখ সম্প্রদায়।
জানা গেছে, সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশনের পক্ষ থেকে নির্মাতাদের বেশ কিছু দৃশ্য বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিছু দৃশ্যে সতর্কীকরণ উল্লেখ করার নির্দেশও রয়েছে। বিশেষ করে ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোর দৃশ্যায়নে। তবে সেন্সর বোর্ডের পক্ষ U/A সার্টিফিকেট মিললেও কবে এই সিনেমা মুক্তি পাবে? সেটা এখনও ঘোষণা করা হয়নি। জুলাই মাসের ৮ তারিখেই সেন্সর রিভিউয়ের জন্য জমা পড়েছিল ‘ইমার্জেন্সি’। তবে তার মাঝেই শিখ সম্প্রদায় একগুচ্ছ দাবি তুলে নিষিদ্ধ করার ডাক দেয়।
‘শিরোমণি গুরুদ্বারা প্রবন্ধক কমিটি’, অস্ট্রেলিয়া শিখ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে দিন কয়েক আগেই ‘ইমার্জেন্সি’ ছবিটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়েছিল। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই শিরোমণি অকালি দলের পক্ষ থেকে আপত্তি উঠেছিল। সোজা সেন্সর বোর্ডের কাছে চিঠি পাঠিয়ে কঙ্গনা রানাউতের ‘ইমার্জেন্সি’ মুক্তি আটকানোর আবেদন জানিয়েছিলেন তারা। সেই বিতর্কের জেরেই এবার পিছিয়ে গেল ‘ইমার্জেন্সি’র মুক্তি। তবে পরবর্তী সময়ে কবে মুক্তি পাবে? সেকথাও ঘোষণা করা হয়নি নির্মাতাদের পক্ষ থেকে।
শিরোমণি কমিটির অভিযোগ, সিনেমাটি ভুয়া তথ্যে ভরা এবং ‘ইমার্জেন্সি’ মুক্তি পেলে সাম্প্রদায়িক হানাহানি হতে পারে। সংশ্লিষ্ট দলের সভাপতি পরমজিৎ সিং স্বর্ণ সেন্সর বোর্ডের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দাবি করেছেন, কঙ্গনার সিনেমার ট্রেলার দেখেই বোঝা গেছে, যে এটি ঐতিহাসিক তথ্য বিকৃত করে শুধু সমগ্র শিখ সম্প্রদায়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে না, বরং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও নষ্ট করবে। সমাজে ঘৃণা ছড়াবে ‘ইমার্জেন্সি’। এই সিনেমায় তুলে ধরা ভুল তথ্য পাঞ্জাবের সামাজিক জীবন সম্পর্কেও দর্শকের কাছে নেতিবাচক মনোভাব ছড়িয়ে দেবে। তাই অবিলম্বে সিনেমাটির মুক্তি আটকান। এর আগে এই একই অভিযোগ এনে ‘ইমার্জেন্সি’ বয়কটের ডাক দিয়েছিল ‘শিরোমণি গুরুদ্বারা প্রবন্ধক কমিটি’ সভাপতি হরজিন্দর সিং ধামি এবং অস্ট্রেলিয়া শিখ কাউন্সিল। তাদের অভিযোগ, কঙ্গনার এই সিনেমাতে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষকে বিচ্ছিন্নতাকামী হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। উপযুক্ত পদক্ষেপের জন্য আবেদন করেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকে।
এমনিতেই এর আগে শিখবিরোধী মন্তব্য করায় পাঞ্জাবে গিয়ে শিখ সম্প্রদায়ের রোষানলের মুখে পড়েছিলেন কঙ্গনা। তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল। এবার ‘ইমার্জেন্সি’ মুক্তির আগেও সেই একই বিপাকে পড়লেন কঙ্গনা রানাউত। এদিকে কঙ্গনা রানাউত বরাবরই বিতর্কে পাত্তা দেন না। ‘কুছ তো লোগ কাহেঙ্গে, লোগো কা কাম হ্যায় কেহেনা!’, বরাবরই এমন দর্শনে বিশ্বাসী। আর তাই তো ‘ইমার্জেন্সি’ মুক্তির আগে শত বিতর্ককে পাত্তা না দিয়ে নিজের মতো করে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এই সিনেমা রিলিজের আগে যেভাবে জলঘোলা হচ্ছে, তাতে এই ছবির ক্ষেত্রেও মুক্তি পিছলেও কি কঙ্গনা রানাউত বক্স অফিসে হিটের মুখ দেখতে পারবেন? নজর থাকবে সেদিকে।