মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় দাম্পত্য কলহের জেরে স্ত্রীসহ ৩জনের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের গওলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা ৩ জনকে উদ্ধার করে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠায়।
দগ্ধ ব্যক্তিরা হলো, ঢাকার ধামরাই উপজেলার আমতা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের হাসান আলীর স্ত্রী শারমিন আক্তার (৩০), তাঁর চাচি শিরিন আক্তার (৫৫) ও চাচাতো ভাই রুবেল হোসেন (৩২)। ঘটনার পর অভিযুক্ত হাসান আলী পালিয়ে গেছে।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে ধামরাইয়ের রাজাপুর গ্রামের হাসান আলীর সাথে সাটুরিয়া উপজেলার গওলা গ্রামের মৃত আতোয়ার হোসেনের মেয়ে শারমিন আক্তারের বিয়ে হয়। এই দম্পতির ৮ বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। কয়েক বছর ধরে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এ নিয়ে হাসান তাঁর স্ত্রী শারমিনকে মারধরও করতো। দাম্পত্য কলহের জেরে গত সোমবার অভিমান করে ছেলেকে নিয়ে শারমিন গওলা গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে আসে।
শুক্রবার সকালে হাসান শ্বশুর বাড়িতে গেলে তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শারমিন পাশের চাচার বাড়িতে যায়। সকাল ১০টার দিকে চাচা শ্বশুরের ঘরের ভেতর গিয়ে শারমিনের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করে হাসান। এ সময় চাচি শিরিন ও শারমিনের চাচাতো ভাই রুবেল তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে তাঁদের শরীরেও কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এতে তাঁদের ৩ জনের শরীরে আগুন ধরে যায়। প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। ততক্ষণে তাঁদের ৩ জনের শরীর আগুনে পুড়ে যায়। তাঁদের উদ্ধার করে শিরিন ও রুবেলকে মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং শারমিনকে জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
শারমিনের মামা মো. বাসু বলেন, বিনা কারণে হাসান তাঁর ভাগনি শারমিনকে প্রায়ই মারধর করতো। এ নিয়ে সামাজিক ভাবে মীমাংসার জন্য একাধিকবার সালিসও হয়েছে। সকালে তাঁর ভাগনিকে হত্যার উদ্দেশ্যে হাসান শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে ভাগনির চাচি ও চাচাতো ভাইকেও একই ভাবে আগুন দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত হাসান পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সাটুরিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মানবেন্দ্র বালো বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে নি। অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।