অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে রাঙামাটিতে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নির্দিষ্ট স্থান থেকে সড়ক ও নৌপথে সব দূরপাল্লার গাড়ি ছেড়ে গেছে।
এদিকে ধমর্ঘট ও ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও এখনো আতঙ্ক কাটেনি। ঝুঁকিপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবস্থান নিয়েছে।
এর আগে রোববার রাতে জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খানের সঙ্গে পরিবহন মালিক সমিতির আলোচনার ভিত্তিতে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে।
উল্লেখ্য, রাঙামাটিতে সংঘর্ষের ঘটনায় বাস, অটোরিকশা ও ট্রাক ভাঙচুর এবং শ্রমিক আহত হওয়ার প্রতিবাদে এবং এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে ২১ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় রাঙামাটি পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
এ হামলায় তাদের ১০টি ট্রাক, তিনটি বাস এবং অসংখ্য অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানায় সংগঠনটি। এতে সাতজন চালক গুরুতর আহত হন।
এর আগে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে খাগড়াছড়ি জেলার পানখাইয়া পাড়ায় মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে মো. মামুন (৩০) নামে এক যুবককে পেটানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মামুন মধ্য শালবাগান এলাকার মৃত নূর নবীর ছেলে। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জেলার দিঘীনালা উপজেলার লারমা স্কোয়ার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জেরে বিকেলে লারমা স্কয়ারের বাজারে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। তাতে ৫০টির বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে যায়। আহত হন পাঁচজন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের নারানখাইয়া স্বনির্ভর এলাকায় ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যায়। রাতের সহিংসতায় রুবেল (৩০), জুনান চাকমা (২০) ও ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) নামে তিনজন নিহত হন।
এ ঘটনার উত্তাপ পরদিন রাঙামাটি শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে জেলা শহরে শত শত পাহাড়ি জনতা মিছিল বের করে। সেই মিছিল থেকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বনরূপা এলাকার দোকানপাট ও স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হয়। পরে দুপুরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।