• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৮ অপরাহ্ন

এবার গোপালগঞ্জ ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে হাসিনার ফোনালাপ ফাঁস

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪
ফাইল ছবি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আজ দুই মাস পূর্ণ হচ্ছে। এই সময়ে বিভিন্নজনের সঙ্গে তিনি ফোনে যে কথাবার্তা বলেছেন এর কয়েকটি ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। এবার গোপালগঞ্জের স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে শেখ হাসিনার ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফোনালাপে শেখ হাসিনার কণ্ঠ শোনা যায়। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে গোপালগঞ্জ সদর থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পরিচয় দেন। তার নাম সায়েম খান। ফোনালাপে ছাত্রলীগ নেতা তাদের ওপর মামলা-হামলার বিবরণ তুলে ধরেন। প্রশাসন তাদের ওপর কীভাবে নির্যাতন করছে সেটা জানান দলীয় প্রধানকে। এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা নির্যাতনকারী পুলিশ কর্মকর্তার নাম-ঠিকানা ও বিস্তারিত পরিচয় সংগ্রহের নির্দেশ দেন এবং এক মাঘে শীত যাবে না জানিয়ে গুনে গুনে হিসাব নেওয়া হবে হুঁশিয়ারি দেন।

শেখ হাসিনা দাবি করেন, এই সরকার বেশি দিন টিকবে না, তিনি আবার ক্ষমতায় আসবেন এবং সবকিছুর প্রতিশোধ নেবেন। আগে না নিলেও এবার আর কাউকে ছাড় দেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন ফ্যাসিস্ট খ্যাতি পাওয়া সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

ফোনালাপের শুরুতে সায়েম খান নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আপা, আপনাকে খুব মিস করতেছি। দেশের অবস্থা তো আপা খুবই খারাপ।

উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুবই খারাপ। সবাই ওপর শুরু করছে এখন… খুন করা।

ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘গতকালকে রাতে গোপালগঞ্জের পার্টি অফিস থেকে ছয়কে গ্রেফতার করছে আপা। আপনি নিউজ জানেন কি না আপা, আমরা বাড়িতে ঘুমাইতে পারতেছি না আপা। প্রশাসন খুব খারাপ করতেছে, যৌথ বাহিনী অভিযান করতেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওখানে তো একজন শিবির, একজন ছাত্রদল। তাদেরকে বসাইছে এখন।’

নেতা নির্ধারণের প্রস্তাব তোলেন এই ছাত্রলীগ নেতা। বলেন, ‘গোপালগঞ্জে আমাদের দিকনির্দেশনা দেবে এ রকম একজনকে আমাদের জন্য সেট করলে ভালো হয়। আর দ্বিতীয়ত তাহলে হয়ত সারা বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা নামতে পারতো।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একজনের নাম বলব। সাথে সাথে দুই-চারটা মামলা দেবে আর গ্রেফতার করে নেবে। নিজেদেরই করতে হবে। যে যার জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। যার যার এলাকা নিজে তাকে কাজ করতে হবে। সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে। গোলাপগঞ্জে যখন হাত দিচ্ছে… গোপালগঞ্জে যে হাত দেয়, তার কিন্তু হাত পোড়ে। গোপালগঞ্জে হাত দিলে এটা ভালো হবে না।’

এ সময় শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ নেতার কলার ধরেছেন যিনি ওই ওসির পরিচয় ও বাড়ি কোথায় তা খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাকে জানাও। বলো যে, এক মাঘে শীত যায় না। ১৫ বছর দেশ চালাইছি, বেতন বাড়াইছি, ভাতা বাড়াইছি, রেসন বাড়াইছি, এই পুলিশের সব কিছু করে দিছি। আর্মিদের করে দিছি। এখন যে কয়জন, সব আমার হাতে প্রমোশন। এখন সুদখোর ইউনূসের কথা শুনে লাফাচ্ছে, আর জামায়াতের! ওরা কয়দিন আছে? এক মাস টেকে কি না দেখো। এক মাস পরে গিয়ে দেখো, যারা বেশি বাড়াবাড়ি করে, তারা কোথায় যাবেন, সেটা বুঝে নিয়েন। তালিকা করে রাখো। যারা ঘর-বাড়ি ভাঙা, তাদের নাম রাখো। ভুল যেন না হয়। পরে এর চাচা, ওর মামা, ওর শ্বশুর, এগুলো যেন না হয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এবার গুনে গুনে হিসাব নেওয়া হবে। আমি কিছু বলি নাই। ২০০৯ সালে আমি সরকারে এসেও কাউকে কিছু বলি নাই। দেশের উন্নয়ন করছি। আল্লাহ যদি সুযোগ দেয়, যারা আমার নেতাকর্মীদের গায়ে হাত দিছে, কোপায় কোপায় ছাত্রলীগ মারতেছে, প্রত্যেক্যের একেকটা শিক্ষা আমি দিয়ে ছাড়ব। আমি যা বলি, আমি তা করি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ