• শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

ভাষাসৈনিক মজিবুর রহমান মাস্টার আর নেই

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪
ছবি : সংগৃহীত

একুশেপদক প্রাপ্ত ভাষা সৈনিক বীরমুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান মাস্টার ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইজি রাজিউন।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৯টায় রংপুর গুড হেলথ হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। বদরগঞ্জের কুতুবপুর ইউনিয়নের খিয়ারপাড়া গ্রামে বাদ আসর পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার দেয় প্রশাসন। তারা নামাজে জানাজায় ও দাফন কাজে অসংখ্য মানুষ অংশ নেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রংপুরের সর্বস্তরের মানুষ।

শোক জানিয়েছেন রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, রংপুর জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ডিসি রবিউল ফয়সাল, এসপি মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব, রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠন।

রাষ্ট্রীয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন মজিবুর রহমান মাস্টার। লড়াকু ব্যক্তিত্বের অধিকারী মজিবুর রহমান মাস্টার বদরগঞ্জ হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় ১৯৪৮ সালে ঢাকায় এসে যোগ দিয়েছিলেন ভাষা সংগ্রামে। গ্রামে ফিরে ভাষার জন্য সংগঠিত করেছিলেন স্থানীয় ছাত্র-জনতাকে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বদরগঞ্জ ডাকবাংলো মাঠে বিক্ষোভের সময় বারিসাত নামের একজন ভাষা সৈনিককে পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে মুজিবরের নেতৃত্বে হয়েছিল থানা ঘেরাও।

মৃত্যুর আগে এক সাক্ষাতকারে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমান যদিও জেলে ছিলেন তবে তিনি আগেই বলেছিলেন যে তোমরা প্রতিবাদ করবে। কায়েদে আজম ইংরেজিতে বললেন উর্দুই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। তখন সবাই ‘নো নো’ বলে প্রতিবাদ করে ওঠে।

বীরমুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান মাস্টার এ প্রতিবেদককে আরো বলেছিলেন, অনেক জায়গায় আমরা গিয়ে ভোট চেয়েছি এই বলে যে বাংলাভাষার জন্য আমরা ভোট চাই। পীরগাছা কাউনিয়া আসনে সে সময় শেরেবাংলা এ কে এম ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের জন্য ভোট প্রার্থনা করেছিলাম।

ভাষা সৈনিক মজিবুর মাস্টার এ প্রতিবেদককে আরো বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দেয়া হাসকিং মিলের মালিক হওয়ায় মেজর ডালিমের দিলকুশার অফিসে যাতায়াত ছিল মুজিবর মাস্টারের। এই সময়ে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হওয়ার গন্ধ পেয়েছিলেন তিনি। বিষয়টি জানাতে পঁচাত্তরের ১৪ আগস্ট সন্ধ্যার পর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরেও গিয়েছিলেন তিনি। ষড়যন্ত্র টের পেয়ে হারাগাছের এমপি আউয়াল সাহেবের নেতৃত্বে ১৯ জন এমপিসহ গিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর কাছে গণভবনে। বিষয়টি জানিয়ে তাকে সাবধানও করেছিলাম। বঙ্গবন্ধু একথা শুনে দাড়িয়ে বলেছিলেন। আল্লাহ ছাড়া আমাকে কেউ মারতে পারবে না। পাঞ্জাবিরাই আমাকে মারতে পারেনি। আমি ৩২ নম্বর ছাড়া কোথাও থাকব না। আমি (বঙ্গবন্ধু) জেলখানায় থাকার সময় একজন কন্টাক্টর সহযোগিতা করে। কামালের মা জেলখানা থেকে আমার অনুমতি নিয়ে এসে সুপারভিশন করে এই বাড়িটা বানায়। আমি এবাড়ি ছাড়ব না, কামালের মা-ও এই বাড়ি ছাড়বে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ