বয়স ও শারীরিক দিক বিবেচনা এবং ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন পেয়েছেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মান্নান।
বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন এই আদেশ দেন। তবে শুনানিতে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা অংশ নেননি।
এম এ মান্নানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সুনামগঞ্জে হওয়া একটি মামলায় এম এ মান্নান ২১ দিন ধরে কারাগারে রয়েছেন। তিনি বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি, চলাফেরা করতে অক্ষম, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত, হুইল চেয়ারে চলাফেরা করেন। এ ছাড়া মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত। এই কারণে আদালত ওনার (এম এ মান্নান) অসুস্থতা ও বয়স বিবেচনায় ২০ হাজার টাকার মুচলেকায় জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আমরা আশা করি অন্যান্য আসামির বেলায়ও আমরা ন্যায়বিচার পাব। আজকেও ন্যায়বিচার পেয়েছি।
এর আগে বেলা ১১টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন শুনানিকালে দুই পক্ষের আইনজীবীদের হট্টগোলে এজলাস ছাড়েন বিচারক। সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন এজলাসে ওঠার পরেই দুই পক্ষের হট্টগোল শুরু হয়। একপর্যায়ের এজলাস ছাড়েন তিনি। পরে দুপুর আড়াইটায় শুনানির সময় নির্ধারণ হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেরেনুর আলী বলেন, বিচারক এজলাসে আসার পরে দুই পক্ষেরই হট্টগোল হয়েছে। আমরা বলেছি, মামলাটি এই আদালতে অস্বাভাবিকভাবে আনা হয়েছে। এই বিষয়ে আমরা বাদীপক্ষ জানি না। এ নিয়ে আজকে শুনানি করতে চাই না। অন্যান্য মামলার মতো মামলার শুনানির তারিখ পরবর্তীতে দেওয়ার জন্য আদালতকে বলেছি। কিন্তু আদালত আমাদের কথা শুনতে চাননি। আসামিপক্ষ শুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য তোড়জোড় করেছে, এটি নিয়ে হট্টগোল হয়েছে।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের (পিপি ও এপিপি) ভূমিকা কী ছিল? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, পিপি ও এপিপিরা রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে থাকার কথা। তারা আসামি পক্ষে থেকেছেন। নিম্ন আদালতেও এই বিষয় নিয়ে আমরা প্রতিবাদ করেছি, আজকেও করেছি। এই পরিস্থিতিতে সুনামগঞ্জে বিচারকার্যক্রম আগামীতে আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে।
বাদীপক্ষের আরেক আইনজীবী মল্লিক মইনউদ্দিন সোহেল বললেন, কোনো আইনজীবীর সাবমিশন ছাড়া এডমিশনটা অস্বাভাবিক। এতে আদালতকে নিয়েও প্রশ্নের উদ্রেক হয়। আমরা মনে করছি, এই অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জামিন শুনানি অস্বাভাবিকই হবে, এমন আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার মামলার অ্যাডমিশন হয়েছে। আজকে শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছিল।
এর আগে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে চিকিৎসার জন্য সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে দুপুরে ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান শিশির রঞ্জন চক্রবর্তীকে সভাপতি করে ৬ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।