হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার পর থেকেই ইসরায়েলে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠন। বিশেষ করে গত ১ অক্টোবর রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এরপর ইরান সরাসরি হামলা না চালালেও লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এবং ইরাক থেকেও ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট ও ড্রোন হামলা চালানো হচ্ছে। যার অধিকাংশই দেশটিতে আঘাত হানে। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে তবে কী দুর্বল হয়ে গেছে তেল আবিবের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা? নেতানিয়াহু প্রশাসন বিষয়টি স্বীকার না করলেও যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে সেনা পাঠানোর ঘোষণায় বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেছে।
রয়টার্স ও আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা প্রতিহত করতে দখলদার ইসরায়েলকে একটি অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র–প্রতিরোধী ব্যবস্থা ও তা চালাতে সেনা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
পেন্টাগনের প্রেসসচিব প্যাট রাইডার এক বিবৃতিতে বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের নির্দেশ অনুযায়ী টার্মিনাল হাই–অ্যাল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) ব্যাটারি মোতায়েন ও সামরিক সদস্যদের ইসরায়েলে পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলের বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যুর পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছিলেন, হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যু ‘প্রতিশোধহীন’ যাবে না। এর তিনদিন পর ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান।
এ ঘটনায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলে মিসাইল ছুড়ে ইরান ‘বড় ভুল’ করেছে। এর মূল্য দিতে হবে তাদের। জবাবে ইরানের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি জানিয়েছেন, পাল্টা হামলা হলে ইসরায়েলজুড়ে সব স্থাপনায় হামলা চালানো হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মিত্র হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলে নানা সময় ছোট আকারে হামলা করেছে হিজবুল্লাহ। বলা হয়, হিজবুল্লাহর প্রধান সমর্থক ও অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ ইরান।
চলতি বছরের মে মাসে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান। যদিও অনেকের ধারণা এর পেছনে ইসরায়েলের হাত রয়েছে। রাইসির মৃত্যু এক মাস পরই (জুলাই) ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে ‘গুপ্ত হামলা’ চালিয়ে হত্যা করে ইসরায়েল। এরপর থেকেই ইসরায়েলে ধারাবাহিক হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ।