নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় গবাদি পশুর শরীর থেকে ‘অ্যানথ্রাক্স’ ছড়িয়ে পড়ছে মানবদেহে। উপজেলার একটি ইউনিয়নে ১২ ব্যক্তিকে ‘অ্যানথ্রাক্স’ রোগী হিসেবে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গবাদি পশুর মাংস খাওয়া এবং আক্রান্ত পশু কেটে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার কারণে এই রোগ মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের চকআদালত খাঁ ও মামুদপুর গ্রামে ‘অ্যানথ্রাক্স’ আক্রান্ত এসব রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। নাজিরপুর ইউনিয়নে গত দুই মাসে অন্তত ৩০টি গরু-ছাগল ‘অ্যানথ্রাক্স’ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক মাসে চকআদালত খাঁ গ্রামের মোল্লা পাড়ার একই পরিবারে জুয়েল মোল্লা ও তার স্ত্রী মিলি খাতুন, কন্যাশিশু জুঁই এবং জুয়েলের বোন জলি খাতুন অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত গরু জবাই ও আনুষঙ্গিক কাজ করায় একই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ঐ গ্রামের ইরফান মোল্লা, মনিরুল ইসলাম, রাজু আহম্মেদ, সাকিমুদ্দিন, আতাউর রহমান, মজনু, আব্দুল মান্নান ও মামুদপুর গ্রামের সাদ্দাম হোসেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের ভাষ্য মতে, অ্যানথ্রাক্স সন্দেহে গত এক সপ্তাহে চারটি গরু জবাই করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। আক্রান্ত সন্দেহ করে তিনটি গরুর রক্ত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া বুধবার থেকে উপজেলাব্যাপী অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে গবাদি পশুর টিকাদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক অহিদুজ্জামান রুবেল বলেন, ‘অ্যানথ্রাক্স রোগীদের তালিকা প্রস্তুত করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি জানান, অ্যানথ্রাক্স মূলত তিন ধরনের হয়ে থাকে। এর মধ্যে দুই ধরনের অ্যানথ্রাক্স নিঃশ্বাসের মাধ্যমে ছড়ায় যা পেটের ভেতর গিয়ে প্রাণহানির কারণ হতে পারে। তবে গুরুদাসপুরে শুধু চামড়ার ওপরেই এই রোগটি দেখা গেছে বলে জানান তিনি।