• সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪১ অপরাহ্ন

ভারত হয়ে নেপালের বিদ্যুৎ আসছে, সরবরাহ কমাল আদানি

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪

মোটা অংকের অর্থ বাকি পড়ায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ৬০ শতাংশের বেশি কমিয়েছে ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি আদানি পাওয়ার। অপর দিকে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রফতানিতে ভারতের অনুমতি চেয়েছে নেপাল। নয়া দিল্লি এই আহ্বানে সাড়া দিয়েছে। নেপাল আশা করছে, শিগিগির তারা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানি করতে পারবে। শনিবার (৯ নভেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে দুটি খবর জানা গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭ নভেম্বরের মধ্যে ৮৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধের জন্য বাংলাদেশকে আলটিমেটাম দিয়েছিল আদানি পাওয়ার। নির্ধারিত সময়ে বকেয়া না পাওয়ায় কোম্পানিটি ৬০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

পূর্ব ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গোড্ডা প্লান্ট থেকে ঢাকায় বিদ্যুৎ রফতানি করা আদানি পাওয়ার আগস্টের শুরুতে সরবরাহ ১৪০০ থেকে ১৫০০ মেগাওয়াট থেকে কমিয়ে ৭০০ থেকে ৭৫০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনে। গত বৃহস্পতিবার সরবরাহ আরও কমিয়ে প্রায় ৫২০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনা হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, অক্টোবরে আদানিকে ৯০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু আগের মাসগুলোতে যেখানে প্রতিমাসে বিল বাবদ ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার করে দেওয়ার চুক্তি রয়েছে সেখানে মাত্র ২০ থেকে ৫০ মিলিয়ন ডলার করে দেওয়া হয়েছে। আদানির কাছ থেকে বাংলাদেশ প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কেনে ১০ থেকে ১২ টাকায়। ইন্দোনেশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা কেনার দামও এর সঙ্গে সম্পর্কিত।

রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশ আদানির জন্য ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র খুলেছে এবং অর্থ পরিশোধ ত্বরান্বিত করেছে। আদানি পাওয়ারের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, বকেয়া পরিশোধের বিষয়টি মাথায় রেখে বাংলাদেশ থেকে চাহিদার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমানো হয়েছে।

এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রফতানিতে ভারতের অনুমতি চেয়েছে নেপাল। কারণ ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপালকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানি করতে হবে। তাই নেপালের আহ্বানে সাড়া দিয়েছে নয়া দিল্লি। শিগগির ভারত তাদের ভূখণ্ড হয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির অনুমতি দেবে।

খবরে বলা হয়, গত ৩ থকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত ভারত সফর করেন নেপালের জ্বালানি ও পানিসম্পদমন্ত্রী দীপক খাড়কা। সফরকালে তিনি ভারতের বিদ্যুৎমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার ও পানিসম্পদমন্ত্রী সি আর পাতিলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তারা জ্বালানি, পানিসম্পদ এবং সেচ বিষয়ে সহযোগিতার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রফতানির ক্ষেত্রে ভারতের বিদ্যুৎ সরবরাহ অবকাঠামো ব্যবহারের বিষয়েও আলোচনা হয়।

গত ৬ নভেম্বর ভারত সফর শেষে দেশে ফেরেন দীপক খাড়কা। পরে নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভারত সফর নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রফতানির জন্য ভারতীয় ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে নেপাল।

নেপাল বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে ভারতের মাধ্যমে ১৫ জুলাই থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসের জন্য ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রফতানির অনুমতি পেয়েছে। তবে এজন্য নেপালকে ভারতের সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ রফতানির অনুমতি পেতে হবে। এ বিষয়ে দীপক খাড়কা বলেন, ‘ভারতীয় পক্ষ নেপালের অনুরোধকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে এবং শিগগিরই অনুমতি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ