বিএনপির বিরুদ্ধে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তমের করা মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন টাঙ্গাইলের সখীপুরের বিএনপির নেতাকর্মীরা।
শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে পৌর শহরের তালতলা চত্বরে সমাবেশ করেন। এ সময় কাদের সিদ্দিকী বিরোধী নানা স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে সমাবেশস্থল।
সমাবেশে উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান সাজু কাদের সিদ্দিকীর নাম উল্লেখ কড়া সমালোচনা করে দীর্ঘ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, কাদের সিদ্দিকী বিশ্বাসঘাতক ও মীরজাফর- এটা বাংলার মানুষ আগে বুঝতে পারে নাই। এটা প্রথমে বুঝতে পেরেছিলেন শেখ হাসিনা। তাই তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন। তাকে বাংলাদেশে আসতে দেয় নাই। পরে জিয়াউর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাকে (কাদের সিদ্দিকী) দেশে আসার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
শাজাহান সাজু আরও বলেন, গত ৭ জানুয়ারি যে নির্বাচন হয়েছিল, সেই নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার কাছ থেকে কাদের সিদ্দিকী ঢাকা-টাঙ্গাইলের বাড়ি এবং ১০০ কোটি টাকারও বেশি সুদ-ব্যাংক ঋণ মওকুফ করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। বাঙালি জাতির সঙ্গে মুনাফেকি করেছিলেন। তার আর বাংলাদেশের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নাই। ক্ষমা না চাইলে তাকে সখীপুরে প্রতিহত করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি করে দেন।
কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগের দালাল, শেখ হাসিনার প্রেতাত্মা উল্লেখ করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি বলেন, কাদের সিদ্দিকী বলেছেন- বিএনপি নাকি চাঁদাবাজি ও লুটপাট করে। অথচ সখীপুরের কোনো মানুষ স্বাধীনতার পরে এতো নিরাপদে থাকতে পারে নাই। যা গত ৫ আগস্টের পরে আমরা সখীপুরকে উপহার দিয়েছি। সখীপুরের সকল স্থাপনা ও প্রশাসনকে নিরাপত্তা ও পাহারা দিয়েছি।
কাদের সিদ্দিকী ক্ষমা না চাইলে সখীপুরে কোথাও সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে শাজাহান সাজু আরও বলেন, কাদের সিদ্দিকীকে প্রতিহত করা হবে। ছাত্রদল, যুবদল, শ্রমিক দল ও কৃষক দলকে প্রস্তুত থাকতে হবে। যেকোনো সময় নির্দেশ আসতে পারে কাদের সিদ্দিকীকে প্রতিহত করার।
সমাবেশে পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর আবুল হাশেম, যুবদল নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
উল্লেখ্য, শনিবার বিকালে দলের বর্ধিত সভায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগ যে দোষে সর্বহারা হয়েছে, সরকার পতনের পর বিএনপি কিন্তু ওই দোষই করছে। জামায়াতেরা বেবি-ট্যাক্সি স্ট্যান্ড দখল করে নাই, বাজার দখল করে চাঁদা নেয় নাই। বিএনপি কিন্তু এমন করছে। আগে আওয়ামী লীগ যেখান থেকে চাঁদা নিত, এখন বিএনপি সেখান থেকেই চাঁদা নেয়। হয়তো চাঁদার রেট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যেখানে যেভাবে ভাগ নেওয়া যায় সব নেয়। এটা কিন্তু জামায়াত নেয় নাই। কাদের সিদ্দিকীর সখীপুরের বাসভবনে উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ওই বর্ধিত সভার আয়োজন করেছিল।
এদিকে দুটি দলের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে গোটা উপজেলায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। স্থানীয় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। পরবর্তীতে পরস্পরবিরোধী যেকোনো কর্মসূচি আসতে পারে বলেও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।