• রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

খুনের দায়ে শেখ হাসিনাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

খুনি হাসিনার ও আওয়ামী লীগের বিচার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। একই সঙ্গে এই বিচারের আগে যারা নির্বাচনের পাঁয়তারা করবে, আমরা তাদের জাতীয় শত্রু ও বেইমান হিসেবে ধরে নেব—এসব কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) জাতীয় নাগরিক কমিটি আয়োজিত বিজয় র‍্যালি শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে বিকেল ৩.৪০ মিনিটে বিজয় র‍্যালিটি শুরু হয়। বাংলামোটর মোড় থেকে শুরু করে শাহবাগ মোড়, কাঁটাবন, নীলক্ষেত, পলাশীর মোড়, টিএসসি হয়ে শাহবাগ মোড়ে এসে র‌্যালি শেষ হয়। র‍্যালিতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে স্মরণ করা হয়েছে।

বিজয় র‍্যালিতে ঢাকার বিভিন্ন থানাসহ আশেপাশের থানার নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নারী পুরুষরা অংশ নেন। র‌্যালীতে প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার লোক অংশ নিয়েছেন।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বাংলাদেশের জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। আমরা যখন দেখতে পাচ্ছি, আমাদের সামনে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত করে যাচ্ছে। হিন্দুত্ববাদ ও দিল্লির এক্সটেনশন গত ৫৩ বছরে মুজিববাদী, ফ্যাসিবাদী সরকার বাংলাদেশের মানুষের গুম-খুনের জন্য দায়ী ছিল, ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের জন্য দায়ী ছিল। ’৭১ সালের পরে বাংলাদেশকে একটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য দায়ী ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের তরুণ যুবক সমাজ ২০২৪ সালে দেখিয়ে দিয়েছে যুবকরা কখনো ঘুমাতে পারে না। আগামীতে বাংলাদেশে যত আক্রমণ আসুক যুবকরা রক্ত দিয়ে সব আক্রমণ প্রতিহত করব।

আমাদের সামনে দুটি শত্রু আছে উল্লেখ করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, একটি হচ্ছে দিল্লির এক্সটেনশন মুজিববাদী শত্রু এবং অপরটি দিল্লির হিন্দুত্ববাদী শত্রু। এই দুই শত্রুকে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। ঢাকাকে দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিতে হবে।

তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের দুই হাজার শহীদের খুনের দায়ে শেখ হাসিনাকে অনতিবিলম্বে বাংলাদেশে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। একই সঙ্গে আজকে আমরা শপথ নিতে চাই, আগামীতে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে পনুঃগঠন হতে দেব না। মুজিববাদ পুনর্বাসন হতে দেব না। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিতে পুনর্বাসন হতে দেব না। বাংলাদেশে আর কোনো বিদেশি তাঁবেদারির প্রতিষ্ঠা করতে দেব না। আজ থেকে আমরা আমাদের তরুণ যুবাদের রক্ত উৎসর্গ করলাম।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক আরও বলেন, খুনি হাসিনার বিচার, আওয়ামী লীগের বিচার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এই মঞ্চ থেকে ঘোষণা করছি, আগামীতে যারা এই বিচারের আগে নির্বাচনের পাঁয়তারা করবে, আমরা তাদের জাতীয় শত্রু ও বেইমান হিসেবে ধরে নেব। গত ৫৩ বছরের ফ্যাসিস্ট রাজনীতি ও ’২৪ এর খুনের বিচারবিহীন কোনো দল যদি বাংলাদেশে থেকে যেতে চায়, তাদের আমরা ওয়াশআউট করব, দেশ থেকে বিতাড়িত করব। বিচারের আগে কোনো নির্বাচন নয়। আগে বিচার পরে নির্বাচন। ইনকিলাব জিন্দাবাদ, মুজিববাদ মুর্দাবাদ।

জাতীয় নাগরিক কসিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান মুজিববাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল, তার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছিল, দেশের সার্বভৌমত্ব ধ্বংস করেছে। এই মুজিববাদ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে গত ১৬ বছরে খুনি হাসিনা বাংলাদেশকে দিল্লির দালাল বানিয়েছে। দেশের মানুষকে নাগরিক হয়ে উঠতে দেয়নি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর দেশের মানুষের নাগরিক হয়ে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

র‌্যালিতে অংশগ্রহণকারীরা ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ, মুজিববাদ মুর্দাবাদ’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি’, ‘একাত্তর মরে না, ২৪ হারে না’, ‘৭১-এর শহীদেরা, ২৪-এর শহীদেরা লও লও লও সালাম’, ‘৭১-এর পতাকা ২৪ দেবে পাহারা’, ‘ফ্যাসিবাদের দিন শেষে, শান্তি এলো বাংলাদেশে’, ‘ফ্যাসিবাদের কবর দিন, বিজয়ের শভেচ্ছা নিন’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘৭১-এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ স্লোগান দেন।

র‌্যালিতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক আলী নাসির খান, যুগ্ম সংগঠক এসএম সাহারিয়ার, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নিজাম উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আরিফ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ