রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের ভূমিকা থাকার অভিযোগ উঠেছে। তবে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ নিয়ে মন্তব্য করা অযৌক্তিক বলে দাবি করেছে রাশিয়া।
সম্প্রতি কাজাখস্তানের আকতাউ শহরের কাছে আজারবাইজান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট জে২-৮২৪৩ বিধ্বস্ত হয়। এমব্রায়ার-১৯০ মডেলের এই যাত্রীবাহী উড়োজাহাজটি বাকু থেকে রাশিয়ার চেচনিয়ার গ্রোজনি শহরের উদ্দেশে রওনা করেছিল। বিমানে থাকা ৬৭ আরোহীর মধ্যে ৩৮ জনের প্রাণহানি ঘটে।
উড়োজাহাজ ঘটনার পেছনে রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের ভূমিকা থাকার অভিযোগ উঠেছে। তবে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ নিয়ে মন্তব্য করা অযৌক্তিক বলে দাবি করেছে রাশিয়া।
এদিকে, হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ‘প্রাথমিক ইঙ্গিত’ দেখে যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে গত ২৫ ডিসেম্বর আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে রাশিয়াই দায়ী হতে পারে।
কিরবি এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য দেননি। তবে তিনি বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনাটি তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে।
উড়োজাহাজটি রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের গুলির শিকার হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিধ্বস্ত হওয়ার আগে এটি চেচনিয়ায় অবতরণের চেষ্টা করেছিলো।
রাশিয়ার সিভিল এভিয়েশন এজেন্সি বলেছে, ইউক্রেনের ড্রোন হামলার কারণে চেচনিয়ার পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত জটিল’।
কিরবিকে উদ্ধৃত করে ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির যেসব ছবি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে তার চেয়ে বেশি ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্রের চোখে ধরা পড়েছে।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আজারবাইজান মনে করে ইলেকট্রনিক জ্যামিংয়ের কারণে উড়োজাহাজটির জিপিএস সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো। এরপর এতে রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম থেকে আসা গুলি বা এ জাতীয় কিছুর আঘাত লাগে।
আজারবাইজান রাশিয়াকে দায়ী করেনি। তবে দেশটির পরিবহন মন্ত্রী রাশাদ নাবিয়েভ বলেছেন, উড়োজাহাজটি ‘বাইরের হস্তক্ষেপে’র শিকার হয়েছে এবং অবতরণের সময় আক্রান্ত হয়েছে। প্রায় সবাই (যারা বেঁচে ফিরেছে) বলেছে, উড়োজাহাজটি যখন গ্রোজনির ওপর ছিল তখন তারা তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছে।
নাবিয়েভ বলেন, তদন্তকারীরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখবেন ‘কোন ধরনের অস্ত্র বা রকেট ব্যবহার করা হয়েছিলো’।
দেশটির সরকারপন্থী একজন এমপি রাশিম মুসাবেকভ বলেছেন, ‘রাশিয়ার ভূখণ্ডে গ্রোজনির আকাশে উড়োজাহাজটিকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। এটা প্রত্যাখ্যান করা অসম্ভব।’
বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন, উড়োজাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পাইলটকে গ্রোজনিতে জরুরি অবতরণ করতে বলা হয়েছিলো। নিকটবর্তী বিমানবন্দরগুলোর পরিবর্তে তার মতে এটিকে কোনো জিপিএস সুবিধা ছাড়া দূরে কাস্পিয়ান সাগরের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছিলো।
ফ্লাইট সহকারী জুলফুকার আসাদভ চেচনিয়ার আকাশে থাকার সময় ‘বাইরের হামলার মতো কিছুতে’ আক্রান্ত হওয়ার সময়ের বর্ণনা দিয়েছে।
সূত্র : বিবিসি।