গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজার ‘যুদ্ধবিরতি সাময়িক’ এবং ‘অভিযান এখনো শেষ হয়নি’। যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা ব্যর্থ হলে তার দেশ হামাসের বিরুদ্ধে আবার যুদ্ধ শুরু করতে প্রস্তুত রয়েছে।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এক টেলিভিশন বক্তৃতায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘আবার গাজায় হামলা চালানোর অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, উভয়ে সমর্থন করবেন। আমরা যদি আবার হামলা শুরু করি, তা হবে আরও জোরালো।’
‘আমরা মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিয়েছি’ জানিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, হামাস বর্তমানে ‘সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ’।
১৫ মাস যুদ্ধের পর ইসরায়েল ও হামাস গত বুধবার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি ৪২ দিনের। গাজার স্থানীয় সময় রবিবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে।
যুদ্ধবিরতির অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ মিশর গতকাল শনিবার জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে এক হাজার ৮৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দীকে ছেড়ে দেবে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে যে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে, তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা এখনো তালিকার বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলেননি।
ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষগুলো বলছে, আজ রবিবার যে তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে তাদের নাম এখনো তারা পাননি। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের ১৬তম দিনে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এই ধাপে ‘স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ওপর জোর দেওয়া হবে’।
দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এই ধাপে অন্য সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিনিময়ে আরও ফিলিস্তিনিকে কারাগার ও বন্দিশালা থেকে ছেড়ে দেবে ইসরায়েল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে সশস্ত্র ব্যক্তিরা ইসরায়েলের সীমান্ত এলাকায় হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন সেনা ও বেসামরিক মানুষ হত্যা এবং ২৫০ জনকে বন্দী করে। এর পর থেকেই ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে। এই যুদ্ধে ৪৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২৩ লাখ। অন্যদিকে জিম্মিদের অনেককেই মুক্তি দিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গাজায় হামাসের কাছে এখনো ৯৮ জন জিম্মি জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় রয়েছেন।