আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও চর্বি জাতীয় খাবার থাকা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি লক্ষ্য রাখতে হয় ভিটামিন, মিনারেলস ও পানির পরিমাণ নিয়ে। তবে অজ্ঞতাবশত: এই অনুপাত নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে উঠে না সঠিকভাবে। আর এতেই সৃষ্টি হয় নানা রোগ ব্যাধির। আমাদের খাবারের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান প্রোটিন। শরীরকে যদি আমরা একটি দালানের সাথে তুলনা করি তাহলে প্রোটিন হলো ইট। আমাদের শরীরে গঠন উপাদান হিসেবে কাজ করে এই প্রোটিন।
পুষ্টিবিদগণ বলেন, প্রতিদিনের ক্যালরি চাহিদার অন্তত ২০ থেকে ৩০ শতাংশ প্রোটিন থেকে পূরণ করা উচিত। খাবারের এই উপাদান শারীরিক বিকাশে ও মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে। শিশুদের বাড়ন্ত বয়সে তাই প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। সাধারণত মাছ, মাংস, দুধ, ডিম এইসব খাবারে প্রোটিন থাকে। কিন্তু শরীরের ওজন কমাতে ও ক্ষতিকর চর্বি এড়াতে গরু কিংবা খাসির মাংস কম খাওয়াই উত্তম। মাংসের মধ্যে সাদা মাংস তুলনামূলক ভালো।
এছাড়া প্রোটিনের উৎস হিসেবে মাছও বেছে নেওয়া যেতে পারে। এগুলো তো প্রাণীজ আমিষ। যারা মাছ, মাংস কম খান বা নিরামিষ ভোজী তাদের জন্য রয়েছে উদ্ভিজ উৎসগুলো। যেমন- ডাল ও বীজ জাতীয় খাবারগুলো। যেমন-ছোলা, শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বাদাম ইত্যাদি খাবারগুলোও প্রোটিনসমৃদ্ধ। তবে এদেরকে বলা হয় দ্বিতীয় শ্রেণির প্রোটিন। এসব খাবারে প্রোটিনের পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর আঁশ, ভিটামিন বি ও আয়রন। তবে মনে রাখতে হবে এক ধরনের ডালে শরীরের সব ধরনের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয় না। সেক্ষেত্রে কয়েক ধরনের ডাল একসঙ্গে করে রান্না করতে হবে।
প্রোটিনের উৎস হিসেবে ডিম কিংবা দুধও খাওয়া যেতে পারে। ডিমের সাদা অংশ প্রোটিনসমৃদ্ধ। যাদের শরীরে ক্ষতিকর চর্বির পরিমাণ বেশি তারা ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে শুধু সাদা অংশ খেতে পারেন। অনেকেই দুধের চর্বি এড়াতে কম জ্বাল দিয়ে রান্না করেন। কিন্তু তা ঠিক নয়। সঠিকভাবেই দুধ জ্বাল দিয়ে তা খাওয়া উচিত। আজকাল বাজারে কিছু লো-ফ্যাট বা নন ফ্যাট সমৃদ্ধ দুধ পাওয়া যায়। যা শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করবে। তবে বেশি প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার নিতে পারবেন বাড়ন্ত বয়সের ছেলে মেয়ে বা গর্ভবতী মহিলা। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
লেখক: চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশ স্কিন সেন্টার