কখনো দরবেশ বেশে, কখনো পুরোদস্তুর ভদ্রলোক, কখনো আবার বেশ ভাবগম্ভীর। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে না দেখলে হয়তো তাকে চেনাই দায়। প্রথম প্রথম তাকে রাশভারী মনে হতো। কিন্তু পরিচয় হওয়ার পরে দেখেছি কত সহজে মানুষকে আপন করে নিতে পারেন তিনি।
তার বড় বৈশিষ্ট্য- একজন আগাগোড়া নির্মোহ ব্যক্তি তিনি। আশপাশের লোকজন যখন ধান্দা ফিকিরে ব্যস্ত, তিনি তখন মগ্ন কবিতা-ছড়া কিংবা নাটক লেখায়। জাগতিক বিত্তবৈভব তার কাছে যেন তুচ্ছ!
বলছিলাম বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মাহবুব উল আলমের কথা। চালচলনে যেমন সাদসিধে তেমনি স্পষ্টবাদী, মনেপ্রাণে ঘৃণা করেন ঘুষ-দুর্নীতিকে। ছোট অফিসার অনেক কথা মুখের উপর বলতে পারেন না। তাই বেছে নিয়েছেন কবিতা, ছড়াকে।
দীর্ঘ চলার পথে যেখানে অনিয়ম দেখেছেন সেখানেই কলম তুলে নিয়েছেন। সুনিপুণ হাতে ফুটিয়ে তুলেছেন সমাজের অসংগতি এবং তা দূর করার উপায়। আবার সাফল্যগাথার চিত্রায়ন করেছেন দারুণভাবে। চলতি পথের এসব কাব্যগাথা নিয়ে প্রকাশ করেছেন জাগরণ নামে ছোট্ট একটি কবিতার বই।
এতে ঠাঁই পেয়েছে ৫৯টি কবিতা। এখানে যেমন দেশের সাফল্যগাথা ফুটে উঠেছে তেমনি উঠে এসেছে নানা রকম অসংগতি। স্থান পেয়েছে আন্তর্জাতিক ইস্যুও। জাতি হিসেবে কেমন হওয়া উচিত, নাগরিক হিসেবেই বা কেমন হওয়া উচিত সবটাই ফুটিয়ে তুলেছেন কলমের খোঁচায়।
তার কবিতা পাঠকের মনে জাগরণ সৃষ্টি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। প্রথম কবিতার নাম ‘বাসনা’ এখানে স্পষ্ট করে লিখেছেন দেশের বিদেশ নীতি কেমন হওয়া উচিত। আটাশ লাইনের কবিতায় চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে একাত্তর থেকে বর্তমান পর্যন্ত। দিয়েছেন দিক-নির্দেশনাও।
“বিদেশি কাউকে প্রভু মানি না
ধারি না কারো ধার,
বন্ধু ভেবে হাত বাড়ালে
প্রতিদান দেবো তার।”
‘মীর জাফর’ কবিতায় রাজনীতিবিদদের একহাত নিয়েছেন। লিখেছেন,
“ছোট্ট একটি দেশের মাঝে
গড়েছি শত দল
বিদেশের সাথে হাত মিলিয়ে
জোগায়েছি বাহু বল।”
পেশাদার লেখক নন, কিন্তু পেশাদার লেখককেও হার মানাবে তার কবিতা। ঠিক যেমন পেশাদার শিল্পী না হয়েও তিনি একাধারে মঞ্চ, যাত্রাপালা, টিভি নাটকে তার অভিনয় দারুণভাবে প্রশংসিত।