• রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৬ অপরাহ্ন

‘দীর্ঘ সময় বসে কাজ করা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর’

আপডেটঃ : বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

প্রতিদিন আমরা একটা দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকি। বেশিরভাগ সময় অফিসের চেয়ারে কিংবা গাড়িতে অথবা বাসায়, দিনের একটি লম্বা সময়ই আমাদের বসে থেকে কাটাতে হয়। হোক সেটা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত, মূলত বসে কাজ করার প্রবণতা আধুনিক সমাজ ব্যবস্থার শুরু থেকেই প্রচলিত হয়ে আসছে। যাইহোক, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশংঙ্কা এতটাই প্রবল যা আগে কেউ কখনও ভাবেনি। বর্তমান সময়ে মানুষ আগের থেকে অনেক বেশি সময় ধরে বসে থাকে। বসে থাকা ক্ষতিকর এই কথাটা হঠাত্ করে শুনলে একটু হাস্যকর লাগতে পারে। মানবদেহের একটি স্বাভাবিক অঙ্গবিন্যাস হলো বসে থাকা, অফিসে কাজের সময়, কারও সঙ্গে দেখা করা, বাসায় বই পড়া, মুভি দেখা, এমনকি যানবাহন ব্যবহারের ক্ষেত্রেও স্বাভাবিক অঙ্গবিন্যাস হলো বসে থাকা। যদিও, তার মানে এই নয় যে বসে থাকায় কোনো স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই। দুর্ভাগ্যবসত, দীর্ঘ সময় বসে থেকে কাজ করা আমাদের প্রতিদিনের একটা স্বাভাবিক অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আসলে, একজন সাধারণ অফিস কর্মী দিনে ৮-১০ ঘণ্টার মতো অফিসে বসে কাজ করে থাকে। অন্যদিকে একজন কৃষক দিনে মাত্র ৩/৪ ঘণ্টারও কম সময় বসে থাকে। যত বেশি বসে থাকা, তত বেশি ওজন বৃদ্ধি। যখন শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটি সামনে আসে, তখন কিছুটা খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন বা কিছু সময় ব্যায়ামের ফলেও আশানুরুপ ক্যালোরি ক্ষয় সম্ভব হয়ে ওঠে না। কারণ, এরপরেই শুরু হয় বসে থেকে অফিসের কাজ করা। এজন্যই বসে থাকা এবং মেদ বৃদ্ধি একে অপরের পরিপুরক। বসে থাকা, অকালমৃত্যুর কারণ হেলথলাইন নিউজলেটারের তথ্যমতে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের উপর পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, যারা দীর্ঘসময় বসে থাকে তাদের অকালমৃত্যুর ঝুঁকি ২২ থেকে ৪৯ শতাংশ। দীর্ঘ সময় বসে থাকা ক্যান্সারের কারণ আজকাল মনে হয় সবকিছুই ক্যান্সারের কারণ, ধুমপান, মোবাইলফোন, অনিয়মিত ঔষধ সেবন।
কিন্তু বসে থাকা? হ্যা, American Institute of Cancer Research এর সাম্প্রতিক তথ্যমতে, অতিরিক্ত সময় বসে থাকা খুব বড় আকারে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া, লম্বা সময় ধরে বসে থাকার ফলে আরও অনেক ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। যেমন : দুরারোগ্য কোমর ব্যাথা, বুক ব্যাথা, ডায়বেটিকস,উচ্চ রক্তচাপ, হূদরোগ, কর্মক্ষমতা হ্রাস, মাত্রাতিরিক্ত মেদ বৃদ্ধি ইত্যাদি। বসে থেকে কাজ করার ফলে স্বাস্থ্য ঝুকি প্রতিরোধের উপায় কী? কীভাবে এই সকল স্বাস্থ্য ঝুঁকিগুলো এড়িয়ে চলা যায়? বিষেশজ্ঞদের মতে, কাজের মধ্যে প্রতি ৩০ মিনিট পরপর বিরতি নিতে হবে, একটু হাঁটাচলা করা এরপরে আবার কাজে বসে যাওয়া। আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন এই বিষয়ে যেটা বলে অনুপ্রাণিত করে থাকে – ‘বসে থাকার তুলনায় মুভ করুন বেশি।’ কিন্তু এটা কোন পরিপূর্ণ গাইডলাইন নয় বলেছেন, কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির মেডিসিন ডিপার্টমেন্ট। তারা মনে করেন এই বিষয় থেকে পরিত্রাণের উপায় খুঁজতে আরও অনেক গবেষণার দরকার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ