ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ধানমন্ডি ক্যাম্পাসে সম্প্রতি ২ দিনব্যাপী ‘ডিআইইউ ফার্মা ক্যারিয়ার ফেস্ট ২০১৮ শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের (BAPI) সহযোগিতায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগ ৩-৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ মিলনায়তনে এ ক্যারিয়ার ফেস্টের আয়োজন করে। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি, প্রধান অতিথি হিসেবে এ ফেস্টের উদ্বোধন করেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ঔষধ প্রশাসনের মহাপরিচালক মেজন জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.মাহবুবু উল হক মজুমদার, অ্যালাইড হেলথ সায়েন্সে এর ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদ ইসমাইল মোস্থফা ও ফার্মেসি বিভাগের প্রধান মো. মোস্তাফিজুর রহমান বক্তব্য রাখেন। ২ দিনব্যাপী ফার্মা ক্যারিয়ার ফেস্টে বাংলাদেশে ঔষধপণ্য ব্যবস্থাপনা, ঔষধ খাতে পেশাগত নিয়োগপ্রাপ্যতা, সঠিক পেশা নির্বাচন বিষয়ক সেমিনার, কর্মশালা, ক্যারিয়ার বিষয়ক কথামালা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় ১৫ টি ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি এ ক্যারিয়ার ফেস্টে অংশগ্রহণ করে। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প খুব দ্রুত বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ছে। এখন বিশ্বের ১৫২টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি হয়। এই সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি ওষুধ শিল্পের সঙ্গে জড়িত যন্ত্রাংশ উত্পাদনের দিকে নজর দিচ্ছে বাংলাদেশ। কারণ যন্ত্রাংশের বাজার অনেক বড়। এত বড় বাজার ছেড়ে দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে কাজ করছে।’ ওষুধ প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘ফার্মেসি সেবাকে তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, তৃণমূলে ফার্মেসি সেবা অত্যন্ত নাজুক। সেখানকার ফার্মেসিগুলো চলছে যেনতেনভাবে। কোথাও কোনো সনদধারী ফার্মাসিস্ট নেই। ফলে ওষুধের ব্যবহার সম্পর্কে কোনো প্রাথমিক জ্ঞান পান না তৃণমূলের মানুষরা। এমনকি শহরের ফার্মেসিগুলোতেও কোনো ফার্মাসিস্ট নেই।’ এ ব্যাপারে ওষুধ প্রশাসন কাজ করছে বলে জানান মোস্তাফিজুর রহমান। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন আট শতাধিক ওষুধ কোম্পানি রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ক্যারিয়ার গড়ার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। এ জন্য নিজেকে ছাত্রাবস্থা থেকেই দক্ষরূপে গড়ে তুলতে হবে বলে মন্তব্য করেন মেজর জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এ ধরনের ফার্মা ফেস্ট শিক্ষার্থীদেরকে ক্যারিয়ার সচেতন করবে। শিক্ষার্থীরা প্র্যাকটিক্যাল জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন বলে অভিমত দেন তিনি। সভাপতির বক্তব্যে ড. মো. সবুর খান বলেন, ওষুধ শিল্প এখন দ্বিতীয় প্রধান ট্যাক্স প্রদানকারী খাত। খুব দ্রুত এই খাত বিকশিত হচ্ছে। এই শিল্পকে আরও উন্নত করতে হলে নতুন নতুন উদ্ভাবন প্রয়োজন।’ এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদেরকে আইডিয়া উদ্ভাবনের আহ্বান জানান। শিক্ষকদেরকেও অনুরোধ জানান, তারা যেন শিক্ষার্থীদেরকে নতুন আইডিয়া উদ্ভাবনের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। প্রয়োজনে কোর্সের সঙ্গে ক্রেডিট যোগ করারও পরামর্শ দেন মো. সবুর খান। ডাক্তাররা রোগীদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন উল্লেখ করে মো. সবুর খান বলেন, ‘ডাক্তারদের সময় নেই রোগীদেরকে ব্যবস্থাপত্র ব্যাখ্যা করার।’ এ বিষয়ে অ্যাপ তৈরি এবং প্রযুক্তি উন্নয়নের প্রচুর সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। আগামী বছর ফার্মা এক্সপো আরও বৃহত্ পরিসরে আয়োজন করা হবে বলে ঘোষণা দেন মো. সবুর খান।