এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি যদিও, তবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভেন্যু হওয়ার সম্ভাবনার সামনে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। যদিও এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) লড়তে হবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের (এসএলসি) সাথে।
আইসিসির দুইটি বড় ইভেন্ট ২০২১ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার কথা রয়েছে ভারতের; কিন্তু ট্যাক্স সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তিন বছর পর অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ভারতে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সেক্ষেত্রে ভারত আয়োজক না হতে পারলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাকে বিকল্প ভেন্যু হিসেবে চিন্তা করছে আইসিসি। এমনটিই জানিয়েছেন আইসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেভিড রিচার্ডসন।
এই টুর্নামেন্টের জন্য কর অব্যাহতির সুবিধা চায় বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি; কিন্তু ভারত সরকার এখনো কর অব্যাহতি দিতে রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত কর অব্যাহতি না দিলে হয়তো ভারতের ভেন্যু বাতিল হতে পারে। কারণ সর্বশেষ ২০১৬ সালে বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) অধীনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কর অব্যাহতি না দেওয়ায় আইসিসির দুই থেকে ২০ থেকে ৩০ মিলিয়ন ডলার রাজস্ব হারায় আইসিসি।
মূলত সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইসিসিকে কর ছাড় দেবে না ভারত। আর এ কারণে শুধু ভারতের জন্যই আইসিসিকে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তাই আইসিসি এবার কড়া ভাষাতেই সতর্ক করলো বিসিসিআইকে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে, ‘বিসিসিআই চাইলে বিষয়টি নিয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে কথা বলুক; কিন্তু আমরা ভারত ছাড়াও অন্য কোথায় এই টুর্নামেন্ট খেলা দেওয়া যেতে পারে তার খোঁজ শুরু করছি। পুরো বিশ্বে টুর্নামেন্ট চালানোর মতো ভেন্যুর অভাব হবে না।’
এমনকি এর আগে ভারতে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ২০০৬ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ২০১১ বিশ্বকাপে বড় অংকের লোকসান গুনতে হয়েছে ক্রিকেটের আইসিসিকে। তাই নতুন ভেন্যুতে এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের চিন্তা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সময়ের যাতে খুব বেশি প্রভাব না পড়ে তেমন কাছাকাছি কোনো দেশেই হতে পারে প্রতিযোগিতা।
তাতেই কপাল খুলতে পারে বাংলাদেশের। কারণ, আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগকে ভারতের আশেপাশেই কোনো দেশকে বিকল্প ভেন্যু হিসেবে চিন্তা করতে বলা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে চিত্রপটে আসছে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের নাম। তবে এই ইস্যুতে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আরো সময় নিতে চায় আইসিসি।
তবে ভারতে এই প্রতিযোগিতা হচ্ছে কি না, বা বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক হতে যাচ্ছে কি না তা জানতে আগামী বছরের শেষ নাগাদ অপেক্ষা করতে হবে। কারণ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পেতে আরো ১২ থেকে ১৬ মাস সময় লাগবে। আইসিসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে আপাতত বিসিসিআই ও ভারতীয় সরকারের সাথেই এই সংক্রান্ত আলোচনা চালিয়ে যাবে। এই আলোচনা ফলপ্রসূ হলে তো কথাই নেই, না হলে খুঁজতে হবে বিকল্প রাস্তা।
জানিয়ে রাখা ভাল, ১৯৯৮ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যদিও তখন এই আসরের নাম ছিল আইসিসি নক আউট ট্রফি বা উইলস ইন্টারন্যাশনাল কাপ। এরপর ২০১১ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কার সাথে মিলে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজক হয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০১৪ সালে এককভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরও আয়োজক হয় বিসিবি।