• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:১২ অপরাহ্ন

৮ হাজারের তালিকা থেকে ৩৭৪ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে রাজি মিয়ানমার!

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৫ মার্চ, ২০১৮

বাংলাদেশ থেকে সম্ভাব্য প্রত্যাবাসনের জন্য মাত্র ৩৭৪ জন রোহিঙ্গা মুসলিমকে যাচাই করতে পেরেছে মিয়ানমার। বুধবার মিয়ানমারের কর্মকর্তারা অভিযোগ করে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের সঠিক তথ্য সরবরাহ করছে না বাংলাদেশ। খবর গার্ডিয়ানের।
গত বছরের আগস্টে রাখাইনের বেশ কয়েকটি পুলিশ ও সেনা চেকপোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৫ আগস্ট থেকে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। অভিযানের নামে ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন চালায়। সেনাবাহিনীর বর্বরতা থেকে বাঁচতে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নকে জাতিগত নিধন হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
তবে এ ধরনের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। দেশটির সেনাবাহিনীর পক্ষে থেকেই বারবার তারা ওই অঞ্চলে দমন-পীড়নের কথা অস্বীকার করেছেন। শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সু চিও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি।
                রাখাইন থেকে উচ্ছেদ হয়ে বাংলাদেশের দিকে আসতে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ঢল
গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দু’মাসের মধ্যেই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দু’মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয় নি। তবে নানা চাপের মুখে অবশেষে নিজেদের অবস্থান জানাল মিয়ানমার সরকার।
বুধবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব  ইউ মিন্ট থু বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের কাছ থেকে পাওয়া ৮ হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গার কাগজপত্র পরীক্ষা করেছেন কর্মকর্তারা। এই ৮ হাজার ৩২ জনের মধ্যে মাত্র ৩৭৪ জনের বিষয় যাচাই করে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। প্রথম দফায় প্রত্যাবাসনে এই ৩৭৪ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়া হবে
তিনি আরো বলেন, ঢাকা থেকে দেয়া নথিপত্র আমাদের চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়নি। অনেকের ক্ষেত্রেই আঙুলের ছাপ ও ছবি যুক্ত করা হয়নি। বাংলাদেশের প্রস্তাবিত প্রত্যাবাসন তালিকায় থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে তিনজন সন্ত্রাসীও ছিল।
নির্বাচিত রোহিঙ্গারা কখন ফিরবে সে সময় নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু বলেন নি মিন্ট থু। তার মন্তব্য, ‘সুবিধাজনক সময়ে ৩৭৪ রোহিঙ্গা দেশে ফিরতে পারে।’
                                         মংডুর বাইরে বাংলাদেশ-মিয়ানার সীমান্তে বিজিপির নিয়মিত টহল
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশে শরণার্থীদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কমিশনার আবুল কালাম বলেন, যদিও খুব নগণ্য সংখ্যক রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করে মিয়ানমার রাজি হয়েছে তবুও আমরা আশা করি রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশের আসা প্রত্যেক রোহিঙ্গাই তাদের দেশে ফিরে যাবে।
তিনি আরো বলেন, বার্মার সরকার থেকে শরণার্থী ফেরানোর নিয়ে নতুন কোন তথ্য তিনি এখনো পাননি। তবে দুই দেশের আগের বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে প্রতিদিন ৩০০ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার সরকার গ্রহণ করবে।
                                        ফিরিয়ে নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য এই ঘরগুলো নির্মাণ করেছে মিয়ানমার সরকার
এদিকে ফিরিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা নিয়েও সন্দিহান মানবাধিকার সংস্থাগুলো। ফিরিয়ে নেয়া রোহিঙ্গাদের আবাসনের জন্য রাখাইনে কিছু ঘর বানিয়েছে মিয়ানমার সরকার যেগুলোকে ‘খেলা জেল’ বলে বর্ণনা করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। গার্ডিয়ান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ