মহান স্বাধীনতা দিবস আমাদের মুক্তির দিন, আনন্দের দিন। এজন্য দিবসটিকে ঘিরে থাকে নানা অনুষ্ঠান। আর সর্বত্র বিরাজ করে লাল-সবুজের ছোঁয়া। ফ্যাশনসচেতনরা শুধু নয়, সবাই কমবেশি চেষ্টা করেন লাল-সবুজের পোশাক পরতে। তাই দেশীয় ফ্যাশনহাউসগুলো দিবসটি উপলক্ষে তৈরি করে লাল-সবুজের কম্বিনেশনে নানা নান্দনিক পোশাক ও উপহার সামগ্রী।
গর্ব করার মতো আমাদের যা কিছু আছে, তার অনুভূতিকে আরও বেশি মানুষের কাছে তুলে ধরার প্রচেষ্টায় কাজ করে চলছে আমাদের দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো। স্বাধীনতার এ মাসে মহান স্বাধীনতার মহিমাকে পোশাকের মাধ্যমে সমুন্নত করতে সচেষ্ট হয়ে তারা নিজেদের আউটলেটগুলোতে স্বাধীনতার পোশাকের বিশেষ কালেকশন রাখেন। স্বাধীনতার রং বলতে লাল-সবুজকেই বোঝায়। আর তাই এ দিবসের ফ্যাশনে প্রাধান্য পায় লাল ও সবুজ এ দুটি রঙ। পোশাক অন্য রঙের হলেও লাল-সবুজের ছোঁয়া থাকতেই হবে। পোশাকে না হোক, ওড়না, ব্যাগ অথবা অলঙ্কারে থাকা চাই লাল-সবুজের ছোয়া। তাই স্বাধীনতা দিবস এলেই দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো নিজেদের সাজিয়ে নেয় লাল-সবুজসহ নানা রঙের ও ঢঙের পোশাকে। শাড়ি, পাঞ্জাবি, শার্ট, কুর্তা, ফতুয়া, স্কার্ট কিংবা শিশুদের জামার ডিজাইনে আনা হয় স্বাধীনতা আমেজ। এখন মানুষের শখ ও পছন্দের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ফ্যাশন হাউসগুলো বেশ রুচিশীল ও উত্সব নির্ভর পোশাক তৈরি করছে।
আবার অনেকেই নিজের সৃজনশীলতায় রাঙিয়ে তৈরি করে নিচ্ছেন নিজের একদম আলাদা একটি স্বাধীনতা দিবসের স্টাইল। নারীরা লাল-সবুজ শাড়ি পরতে পারেন লম্বা হাতের ব্লাউজের সঙ্গে। লাল-সবুজ শাড়ি পরতে না চাইলেও এক রঙা শাড়ির সঙ্গে লাল-সবুজের সংমিশ্রণে ব্লাউজ পরুন। এক্ষেত্রে সাদা, ঘিয়া কিংবা কালো শাড়ির সঙ্গে মানানসই লাল কিংবা সবুজ ব্লাউজের হাতায় লেস বসানো হলে দেখতে আরও সুন্দর লাগবে আপনার স্বাধীনতা দিবসের পোশাক। যারা শাড়িতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না, তারা সালোয়ার-কামিজ অথবা লম্বা কুর্তা পরে নিন। এক্ষেত্রেও উঁচু গলা ও লম্বা হাতা মানানসই হবে। পোশাকে লাল-সবুজ রাখতে না চাইলে রাখুন ওড়না, স্কার্ফ ও গহনা-সাজে। আর যদি আলাদাভাবে পোশাক কেনা না হয়ে থাকে, তাহলে একটি বড় পতাকা কিনে গায়ে জড়িয়ে নিতে পারেন। অথবা কপালে লাল-সবুজ টিপ পরে দুহাত সাজিয়ে তুলুন লাল-সবুজ চুড়িতে, খোঁপায় পরতে পারেন লাল ফুল। মেকআপটা করে নিতে পারেন লাল-সবুজের শেড ঘেঁষে, গালে একে নিতে পারেন আলপনা। পুরুষরা স্বাধীনতা দিবসের ফ্যাশন হিসেবে বেছে নিতে পারেন পাঞ্জাবি বা টি-শার্ট।
স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কিত বিভিন্ন ডিজাইনের টি-শার্টগুলো পাওয়া যায় শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোতে। আবার লাল বা সবুজ একটি টি-শার্ট পরে সঙ্গে একটি পতাকা বেঁধে নিতে পারেন কপালে বা হাতে। লাল-সবুজ ব্রেসলেটও ব্যবহার করতে পারেন। বাংলাদেশের পতাকার একটি চমত্কার স্টিকার কিনে বসিয়ে নিতে পারেন পরনের সাদামাটা টি-শার্টেই। যারা পাঞ্জাবি পরতে চাইতেন, তারা একটি মোটা খাদি কাপড়ের পাঞ্জাবি বেছে নিতে পারেন। লাল-সবুজের সংমিশ্রণের পাঞ্জাবি কিনে নিতে পারবেন বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস থেকে। লাল-সবুজ সংগ্রহে না থাকলে শুধু লাল কিংবা শুধু সবুজও পরে নিতে পারেন। আর যদি আলাদাভাবে স্বাধীনতা দিবসের জন্য পোশাক কিনতে না চান তাহলে মাথায় একটি লাল-সবুজ গামছা কিংবা পতাকা পেঁচিয়ে নিতে পারেন। অনেকে শরীরে চাদরের মতো জড়িয়ে নেন প্রিয় পতাকাটি।
আপনার ছোট শিশুটিকে কী পরাবেন ভেবেছেন? এবার শিশুদের ফ্যাশনে আধিক্য পাচ্ছে লালের বাহার। বেশ অনেকটা লালের সঙ্গে অল্প সবুজের মিশ্রণে সাজিয়ে তুলুন সন্তানকে। গালে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পতাকা এঁকে দেন রং দিয়ে। ইচ্ছে করলে একটি পতাকাও আঁকিয়ে নিতে পারেন নিজের ও নিজের সন্তানের গালে। স্বাধীনতার চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে উপহার দিন প্রিয়জনকে। এই তালিকায় রাখতে পারেন মগ, টি-শার্ট, পোস্টার, ভিউকার্ড, সিডি, ডিভিডি, ফতুয়া, টপস, মাথার স্কার্ফ, ব্যান্ডানা, পাঞ্জাবি, মাটির তৈরি মেয়েদের কানের দুল, গলার হার, চুড়ি, ছোট আকারের জাতীয় পতাকাসহ নানা কিছু। স্বাধীনতা দিবসে লাল-সবুজের রঙে নিজেকে সুন্দর করে উপস্থাপন করাটা জরুরি।
মডেল : রিবা
পোশাক : কে ক্র্যাফট
ছবি : বিশ্বজিৎ সরকার