দেশের গুণী অভিনেত্রী ডলি জহুর। নিজের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমা, নাটক, টেলিফিল্ম। ক’দিন আগেই তিনি পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা। আর এখন নিজেকে তৈরি করছেন পরিচালক হিসেবে। শুটিং শেষ করেছেন তার পরিচালিত প্রথম টেলিফিল্ম ‘দাঁড়কাক’র। এটি দেখানো হবে চ্যানেল আইতে। ক’দিন আগেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন। অনুভূতি কেমন? ডলি জহুর বলেন, আমার আলাদা কোনো কিছু মনে হচ্ছে না। তবে আমি কেন পুরস্কার পেলাম সেটা আমার প্রশ্ন। এটি কেন পেলাম তা শুধু জুরি বোর্ড বলতে পারবে।
আর সম্মাননা সবসময় আনন্দদায়ক এবং আমিও এর ব্যতিক্রম নই। আপনার এই আজীবন সম্মাননা পুরস্কার নিয়ে শোবিজের দু’একজন শিল্পী সমালোচনাও করেছেন। বিষয়টি কীভাবে দেখেন? ডলি জহুর বলেন, আমি কারও উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চাই না। সকলেরই কথা বলার স্বাধীনতা আছে। আর প্রত্যেকটা শিল্পী পুরস্কারের আশা করে। তবে জুরি বোর্ডের ওপর তো আর আমাদের হাত নেই। তাদের বিচারে যে প্রাপ্য সেই পুরস্কার পাবে। তিনি আরও বলেন, লিয়াজোঁ করে কীভাবে পুরস্কার পেতে হয় সে বিষয়ে আমার ধারণা নেই। যোগ্যতা থাকলে আমি পুরস্কার পাবো এটাই স্বাভাবিক।
সম্প্রতি গুণী নাট্যজন মামুনুর রশীদ বলেছেন, রুচীর দুর্ভিক্ষ চলছে। যার মাধ্যমে হিরো আলমের উত্থান হয়েছে। আপনি এর সঙ্গে কতোটা একমত? বরেণ্য এই অভিনয়শিল্পী বলেন, হিরো আলম তার নিজের যোগ্যতায় অবস্থান তৈরি করেছে। তবে মামুন ভাইয়ের সামনে দাঁড়াবার যোগ্যতা তার এখনো হয়নি। মামুনুর রশীদ হলেন পাহাড় সমান শিল্প। বর্তমান ইন্ডাস্ট্রিতে দাপিয়ে বেড়ানো শিল্পীরা মামুনুর রশীদের হাতে তৈরি। তার সম্পর্কে কথা বলতে গেলে একটু ভেবে চিন্তে বলা উচিত। তবে এও বলবো না যে হিরো আলম আর্টিস্ট না। সে যেমনই হোক কাজ তো করছে। সেটা মুদ্রার এপিঠ হোক বা ওপিঠ। নাটকের বর্তমান অবস্থা নিয়ে গুণী এই অভিনেত্রী বলেন, বর্তমান সময়ের নাটকের মানে ভাটা পড়েনি। আমাদের প্রযুক্তির কারণে নাটক ভালো লাগছে না।
তবে ধৈর্য ধরে নাটক দেখলে প্রায় নাটকই ভালো লাগবে। অন্যদিকে প্রচুর কাজ আর অনলাইনে সহজে নাটক দেখতে পাওয়ার কারণে অনেকের কাছে মনে হয় নাটকের মান কিছুটা কমেছে। আবার কিছু কিছু কাজ হচ্ছে যেগুলো ভালো লাগার মতো না। বর্তমানে সময়ের শিল্পীদের কেমন দেখছেন? এ অভিনেত্রী বলেন, আমাদের শোবিজ অঙ্গনে নতুনরা দারুণ করছে। তারা ভালো ডিরেকশন এবং সুযোগ সুবিধা পেলে আরও ভালো করবে। ডলি জহুর আরও বলেন, আমি ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম মঞ্চ নাটক দিয়ে। এখনো সেই মঞ্চে ফিরে যেতে চাই। আমি স্বপ্নেও সেই মঞ্চেই কাজ করি। এত ক্যামেরা, লাইটিং, সেটআপ সবকিছুকে ছাড়িয়ে এখনো আমাকে আমার সেই মঞ্চই টানে। নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তিনি বলেন, আমি স্বামী হারিয়েছি।
যখন তিনি ছিলেন তার জন্য রান্না করে রেখে আমি কাজে যেতাম। আর ব্যক্তিগত জীবনে আমার একটি মাত্র ছেলে। সে দেশের বাইরে থাকে। আমার সঙ্গে ছেলে এবং ছেলের বউয়ের অনেক গল্প হয়। তবে সবকিছু ঠিক রেখেই আমি আছি এবং কাজ করছি। সম্প্রতি পরিচালনায় নাম লিখিয়েছেন অভিনেত্রী ডলি জহুর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরিচালনায় দায়িত্বটা একটু বেশি। কেন না এতদিন নিজে অন্যের কাজ করে এসেছি আর এখন আমার দায়িত্বে কিছু শিল্পী কাজ করেছে। তবে পরবর্তীতে পরিচালনায় যাবো কিনা তা আমার প্রথম কাজের ওপর নির্ভর করবে। আমি আমার এই কাজকে পাস এবং ফেলের সঙ্গে তুলনা করছি। পাস করলে থাকবো নইলে সালাম জানিয়ে বিদায় নিবো পরিচালনা থেকে।