• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৬ অপরাহ্ন

জরুরি অবস্থা মধ্য চাইল সামরিক সহায়তা আলবার্টা,

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩

আলবার্টা প্রদেশজুড়ে ৯৪টি দাবানল জ্বলছে, আর এর মধ্যে ২৭টি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। গত ৫ মের ছবি

দাবানল ছড়িয়ে পড়ার কারণে আগেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল কানাডার আলবার্টা প্রদেশ। তবে দাবানল কেবলই বাড়ছে এবং বিভিন্ন স্থানে সেটি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে দাবানল মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সামরিক সহায়তার অনুরোধ জানিয়েছে প্রদেশটি।

দিন দু’য়েক আগে দুর্যোগময় এই পরিস্থিতিকে ‘অভূতপূর্ব’ বলেও অভিহিত করেছিল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘অভূতপূর্ব’ দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কানাডার ফেডারেল সরকারের কাছে সামরিক সহায়তার অনুরোধ করেছে আলবার্টা প্রদেশ। স্থানীয় সময় সোমবার বিকেল পর্যন্ত আলবার্টা প্রদেশজুড়ে ৯৪টি দাবানল জ্বলছে। আর এর মধ্যে ২৭টি নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিবিসি বলছে, দাবানল ভয়াবহ আকার ধারণ করায় ২৯ হাজারেরও বেশি মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে। এর আগে দাবানলের কারণে প্রদেশটি গত সপ্তাহান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে।

সোমবার আলবার্টার প্রাদেশিক সরকারের প্রধান ড্যানিয়েল স্মিথ বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সাথে কথা বলেছেন এবং ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে সামরিক সহায়তাসহ দাবানল মোকাবিলায় অতিরিক্ত সাহায্য দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।

ড্যানিয়েল স্মিথ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে পাঠানো হবে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো।’

তিনি আরও বলেন, বিদ্যমান এই পরিস্থিতি প্রদেশের জন্য বেশ ‘চ্যালেঞ্জিং সময়’ বয়ে এনেছে কারণ অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা আগুনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং একইসঙ্গে হুমকির মুখে থাকা বাসিন্দা ও হাসপাতালের রোগীদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

ড্যানিয়েল স্মিথের ভাষায়, ‘নিজেদের সবকিছু ছেড়ে হাজার হাজার লোক তাদের বাড়িঘর এবং কর্মস্থল থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। পেছনে ফেলে আসা সব কিছু তারা হারিয়ে ফেলবেন কিনা সেটাই তারা চিন্তা করছেন।’

আলবার্টার প্রাদেশিক সরকারের এই প্রিমিয়ার বলেছেন, যেসব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক সাত দিনের বেশি সময় ধরে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে দূরে থাকতে বাধ্য হয়েছে তাদেরকে জরুরি আর্থিক সহায়তা হিসেবে ১ হাজার ২৫০ কানাডিয়ান ডলার প্রদান করবে প্রদেশিক কর্তৃপক্ষ।

বিবিসি বলছে, কুইবেক এবং অন্টারিওসহ অন্যান্য প্রদেশের অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করার জন্য আলবার্টাতে গেছেন। দাবানল এই প্রদেশের পশ্চিম এবং উত্তর অংশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া রকি মাউন্টেইন ফুটহিলস বরাবর বেশ কয়েকটি এলাকাকেও গ্রাস করছে দাবানল।

দাবানলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে ড্রেটন ভ্যালি ও ফক্স লেক। প্রাদেশিক রাজধানী এডমন্টন থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার (৮৭ মাইল) পশ্চিমে ড্রেটন ভ্যালি এবং রাজধানী শহরের প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার উত্তরে ফক্স লেক অবস্থিত। সেখানে ২০টি বাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে।

আলবার্টা কানাডার একটি প্রধান তেল উৎপাদনকারী অঞ্চল। কিন্তু দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পর প্রাথমিকভাবে সেখানে এসব অবকাঠামো ক্ষয়ক্ষতির মুখে না পড়লেও পরে আগুনের কারণে কিছু তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কূপ এবং পাইপলাইন সিস্টেম বন্ধ হয়ে গেছে।

এতে করে কানাডার গ্যাস রপ্তানিও অনেকটা কমে গেছে। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রে কানাডিয়ান প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি ৬.৭ বিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এসেছে। যা ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের পর থেকে সর্বনিম্ন।

এছাড়া আলবার্টার পার্শ্ববর্তী প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া এবং সাসকাচোয়ানের কিছু বাসিন্দাকেও তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কারণ এসব প্রদেশও তাদের নিজস্ব দাবানল মোকাবিলায় লড়াই করছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ