পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আদালত চত্বর থেকে গ্রেফতারের পর আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ রিমান্ডের আবেদন করতে চলেছে দেশটির ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবলিটি ব্যুরো (এনএবি)। সংস্থাটির সূত্র পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনকে জানিয়েছে, পিটিআই চেয়ারম্যানকে বুধবার (১০ মে) বিকেলে জবাবদিহিতার আদালতে হাজির করা হবে।
সূত্রটি বলেছে, আমরা তাকে অন্তত চার-পাঁচ দিন হেফাজতে রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবো।
পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি অর্ডিন্যান্স, ১৯৯৯-এর নতুন সংশোধনীতে যে কোনো আদালত প্রদত্ত শারীরিক রিমান্ডের সময়কাল ৯০ দিন থেকে কমিয়ে ১৪ দিন করা হয়েছে।
এনএবি সূত্র বলেছে, আমরা আদালতের কাছে ইমরান খানের সর্বোচ্চ ১৪ দিনের শারীরিক রিমান্ড চাইবো। আদালত অন্তত চার-পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করবেন বলে আশা করা যায়।
পিটিআই প্রধানের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে সূত্রটি জানায়, ইমরান খানকে এনএবির রাওয়ালপিন্ডি/ইসলামাবাদ আঞ্চলিক সদর দপ্তরে ‘আরামদায়ক পরিবেশে’ রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইমরান খানের সঙ্গে ‘কঠোর আচরণ’ করা হবে না। তাকে কেবল মামলায় তার জড়িত থাকা ও আর্থিক সুবিধা চাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গ্রেফতার বৈধ
এদিকে, মঙ্গলবার আদালত চত্বর থেকে ইমরান খানকে গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টা পরে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট বলেছে, এই পদক্ষেপ বৈধ ছিল।
ইমরানের আইনজীবী ফয়সাল ফরিদ চৌধুরীও আল-জাজিরাকে আদালতের সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, আদালত গ্রেফতার বৈধ ঘোষণা করেছে। এখন ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য আমরা দলের নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করছি।
এর আগে, মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট দুপুরে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতার করে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবলিটি ব্যুরো (এনএবি)। আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় তাকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের ভেতর থেকে তুলে নেয় রেঞ্জার্স সদস্যরা।
এসময় গুলিতে আহত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর হুইলচেয়ার ছুড়ে ফেলা হয় এবং তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে ‘অমানবিকভাবে’ গাড়িতে তোলা হয় বলে অভিযোগ করেছে তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।
পিটিআই’র অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, বিপুল সংখ্যক রেঞ্জার্স সদস্য ইমরান খানকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে দ্রুত গাড়িতে তুলছে। আরেকটি ভিডিওতে তার আইনজীবীকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা গেছে।
জিও নিউজের খবর অনুসারে, একাধিক মামলায় জামিনের জন্য হাইকোর্টে গিয়েছিলেন পিটিআই চেয়ারম্যান। সেখান থেকে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। তার গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল এনএবি কর্মকর্তাদের কাছে।
আল-কাদির ট্রাস্ট মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির পাঁচ হাজার কোটি রুপি বৈধ করার জন্য কয়েকশ কোটি রুপি নিয়েছেন পিটিআই প্রধান ও তার স্ত্রী।
তবে পিটিআই চেয়ারম্যান বলছেন, তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।