পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর দেশটিতে ভ্রমণে নিজ নাগরিকদের সতর্ক করেছে বৃটেন, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। দেশগুলো আশঙ্কা করছে, ইমরানের গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানে যে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়েছে তা আরও ভয়ানক রূপ ধারণ করতে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নিজ নিজ নাগরিকরা যাতে পাকিস্তান ভ্রমণ না করেন সেই আহ্বান জানিয়েছে দেশ তিনটি।
বৃটেনের ‘ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস’ বা এফসিডিও বৃটিশদের পাকিস্তানের রাজনৈতিক সমাবেশ ও জনসভা এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিয়েছে। সতর্কতার অংশ হিসেবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যগুলোতে চোখ রাখতে বলা হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি জোর দিয়ে বলেছেন, আমরা পাকিস্তানে শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্র দেখতে চাই। আমরা চাই দেশটিতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হোক।
পাকিস্তান সফরের ‘ট্রাভেল এডভাইস’ পেজ আপডেট করেছে বৃটেন। ওই আপডেটটি বৃটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার অ্যান্ড্রু ডালগ্লিশ তার টুইটার অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন। এতে পাকিস্তানে অবস্থিত বৃটিশ নাগরিকদের বেশ কিছু অঞ্চলে যেতে পুরোপুরি নিষেধ করেছে। এগুলো হচ্ছে, বাউজার, মহমান্দ, খাইবার, ওরাকজাই, কুররাম, উত্তর ওয়াজিরিস্তান, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান, চরসাদ্দা, কোহাট, ট্যাঙ্ক, বান্নু, লাক্কি, ডেরা ইসমাইল খান, সোয়াত, বুনের এবং পেশোয়ার। এছাড়া আরও বেশ কিছু হাইওয়ে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে এতে।
এদিকে পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘স্বাভাবিক না’ বলে বর্ণনা করেছে দেশটিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস।
ফলে যেসব মার্কিন নাগরিক পাকিস্তান ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন তাদের সার্বিক দিক ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের মিডিয়ার ওপর নজর রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে বিবৃতিতে। তিন দেশই তাদের দূতাবাস কর্মীদেরও সতর্ক থাকতে নির্দেশনা জারি করেছে।
মার্কিন দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসলামাবাদে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করছে দূতাবাস। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ১০ তারিখের একটি শিডিউল বাতিল করা হয়েছে। পাকিস্তানে থাকা মার্কিন নাগরিকদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি জনসমাগম স্থান এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে মঙ্গলবার লাহোর থেকে ইসলামাবাদের আদালতে এসেছিলেন ইমরান খান। এসময় আদালতের বাইরে থেকে আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা কাঁচের জানালা ভেঙে আইনজীবী এবং ইমরানের নিরাপত্তা কর্মীদের মারধর করার পরে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। তার গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ এবং মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে পাকিস্তানে।