• বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২০ পূর্বাহ্ন

ভোট দিচ্ছে তুরস্ক বাসী

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ১৪ মে, ২০২৩

তুরস্কে ভোট শুরু হয়েছে। দুই দশকের মধ্যে এবার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে দেশটির ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। ৬ কোটি ৪০ লাখের বেশি ভোটার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবেন। নির্বাচন শুরু হওয়ার আগে এক লাখ ৯১ হাজার ৮৮৫ ব্যালট বক্স দেশটির বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। তুরস্কের ভোটাররা আগামী পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট ও সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত করবেন।

প্রায় ২০ বছর ধরে তুরস্ক শাসন করছেন এরদোয়ান। ২০১৮ সালে জয়ী হওয়ার এক মাস পর সংসদীয় ব্যবস্থা থেকে প্রেসিডেন্ট-প্রধান ব্যবস্থা চালু করেন তিনি। সে সময় কঠোর হাতে বিক্ষোভ মোকাবিলা করেছেন। ইউরোপ তথা বিশ্ব যেন তুরস্ককে গুরুত্ব দিতে বাধ্য হয় সেই চেষ্টা করেছেন। এর আগের নির্বাচনগুলোতে কার্যত তেমন কোনো কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েননি তিনি। কিন্তু এবার পড়েছেন।

প্রেসিডেন্ট থাকার ক্ষেত্রে এরদোয়ানের পথে প্রধান কাঁটা হলো, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মানুষের ক্ষোভ। শুধু যে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে তা নয়, দেশটির অর্থনীতিও সংকটে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের কথা না শুনে এরদোয়ান নিজের আর্থিক নীতিতে চলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যার কারণে সংকট আরও বেড়েছে। তার প্রভাব গিয়ে পড়েছে মানুষের জীবনে, কর্মসংস্থানে। এবারের নির্বাচনে এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিচদারোলু ও সিনান ওগান।

তবে রোববারের নির্বাচন হতে যাচ্ছে তার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় লড়াই। কারণ এবার তাকে মোকাবিলা করতে একজোট হয়েছে বিরোধী সবগুলো দল। এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিচদারোলু শুক্রবার তার সমর্থকদের সঙ্গে সমাবেশে হাজির হন। সে সময় তার দুই পাশে ছিলেন সেদেশের অনেকগুলো রাজনৈতিক দল থেকে আসা মিত্ররা। তুরস্কের রাজনীতিতে অনেকদিন এমনটা ঘটেনি। আঙ্কারায় তখন আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নেমেছে। তার মধ্যেই সেই সমাবেশে কিলিচদারুলু ঘোষণা করলেন-তিনি দেশে ‌‘শান্তি ও গণতন্ত্র’ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণপূর্ব তুরস্কে পরপর দুটি বিধ্বংসী ভূমিকম্পে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ মারা যান। বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারের অবহেলায় হাজার হাজার ভবন নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছিল, যেগুলো ধসে পড়ায় এই বিপুল প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি অনুযায়ী যেভাবে ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে সরকারের ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত ছিল, সেটিও হয়নি। পরে উদ্ধারকাজে দেরির জন্য এরদোয়ান নিজেই জনগণের কাছে ক্ষমা চান।

এদিকে দীর্ঘদিনের ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যূত করার জন্য তিনি ভোটারদের আহ্বান জানাচ্ছেন। অপরদিকে এরদোয়ান বলছেন, বহু চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তুরস্কের মাথা উঁচু রেখেছেন তিনি। চ্যালেঞ্জগুলোর একটি ছিল অর্থনীতি- যার ওপর দিয়ে দুই অংকের মুদ্রাস্ফীতি এবং ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ ভূমিকম্পের মতো বহু ঝড়-ঝাপটা বয়ে গিয়েছে।

তুরস্কের এবারের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের সময় এ দুটিই ছিল প্রধান ইস্যু। কেমাল কিলিচদারুলুর বয়স এখন ৭৪ বছর এবং তাকে একজন মৃদুভাষী লোক হিসেবেই মনে করা হয়। কিন্তু শুক্রবারের সমাবেশে আগত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি এক জোরালো বক্তৃতা দিয়েছেন।

জনমত জরিপগুলোতে দেখা যায়, সামান্য ব্যবধানে হলেও তাতে এগিয়ে আছেন কিলিচদারোলু। তার সমর্থকরা এখন এ স্বপ্ন দেখার সাহস করছেন যে, তিনি হয়তো ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে সরাসরি নির্বাচিত হবেন এবং দ্বিতীয় দফায় ভোটাভুটির আর দরকার হবে না। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, হেরে গেলে তিনি কী করবেন? জবাবে এরদোয়ান বললেন, এটা একটা অর্থহীন প্রশ্ন। এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মত ভোট দেবেন ৫০ লাখ নতুন ভোটার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ